রাজধানীর একে হাইস্কুল এন্ড কলেজ ফান্ডের তিন কোটি টাকা মেরে দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও শিক্ষক নেতা মো: সেলিম ভুইয়া। এর আগে নাশকতা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের দায়ে অভিযুক্ত হয়ে জেল খাটেন এবং চাকরি থেকে থেকে বরখাস্ত হন সেলিম ভুইয়া। রাজধানীর দনিয়ার এ কে হাইস্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ (বরখাস্ত) ও বিএনপি-জামাতপন্থী শিক্ষক-কর্মচারীদের সংগঠন শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান তিনি। ২২ নভেম্বর গ্রেপ্তার হন তিনি। তার সঙ্গে একই কলেজের প্রধান প্রধান করণীক ইকবাল হোসেনকেও গ্রেপ্তার করা হয়। কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতির করা অভিযোগ আদালতের আদেশে তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন। পিবিআই আদালেত তদন্ত প্রতিবেদন দালিখ করে। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের জামিন বাতিল হয়। সংগঠনের একাধিক নেতা দৈনিকশিক্ষাকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ২০১২ খ্রিস্টাব্দে নাশকতা, ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে চাকরি ফিরে পাওয়া ও বিএনপি-জামাতপন্থী শিক্ষকদের নিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন করার কাজে নিয়োজিত হন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির নেতা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বরখাস্ত হওয়া আতিক হেলাল এবং একটি বেসরকারি স্কুলের খন্ডকালীন শিক্ষক সায়েদুজ্জামান ও অশিক্ষক কর্মচারী আসাদুজ্জামানকে দিয়ে অনলাইন ও ফেসবুকে সরকার বিরোধী নানা অপ্রচার চালানোর অভিযোগ সেলিম ভুইয়ার বিরুদ্ধে। ২০০৪ সালে সেলিম ভুইয়া একটির দৈনিক পত্রিকারও মালিক ও সম্পাদক বনে যান। ঘুপচি বিজ্ঞাপন নিয়ে টাকা কামান বেসুমার। ২০০৭ সাল থেকে পত্রিকাটি নিয়মিত বের হচ্ছে না। এখন তিনি ওই পত্রিকার সম্পাদক ও মালিক।
অধ্যক্ষ হওয়ার প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা না থাকলেও বিএনপি-জামাত জোট সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ও যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামী ড. এম ওসমান ফারুকের সহায়তায় একে স্কুলের অধ্যক্ষ হন তিনি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর ও অপর একটি অডিট ফার্মের করা অডিটে ধরা পড়েছে কলেজের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা। পুলিশের তদন্তেও প্রমাণ মেলে অভিযোগের। পরে মামলা দায়ের করা হয়।
বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্য-সচিব থাকাকালে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে সেলিম ভুইয়ার বিরুদ্ধে। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জমা করা ও সরকার কর্তৃক দেয়া চারশ কোটি টাকা রাষ্ট্রায়াত্ত সোনালী ব্যাংক থেকে তুলে বিতর্কিত বেসরকারি ওরিয়েন্টালসহ দুটি বেসরকারি ব্যাংকে জমা করেন সেলিম ভুইয়া ও মুগীস উদিদন মাহমুদ। এর মাধ্যমে সেলিম ভুইয়ার নিজের কিছু লাভ হয় বলে জানা যায়। সেলিম ভুইয়া গংরা যে বেসরকারি ব্যাংকে টাকা রেখেছেন সেই ধারাবাহিকত বজায় রেখেছেন আসাদুল হকসহ অন্যান্যরা।