স্কুল ও কলেজ জাতীয়করণে নৈরাজ্য বন্ধ করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বেসরকারি স্কুল ও কলেজ জাতীয়করণ নিয়ে চলছে নৈরাজ্য। প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের প্রতিটি স্তরে হচ্ছে অনিয়ম। আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও উঠছে। বিভিন্ন জেলায় নিজ নিজ পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণের দাবিতে মিছিল-সভাবেশ হচ্ছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে নানারকম অভিযোগও দেয়া হচ্ছে। প্রস্তাবিত কলেজের ভৌত অবকাঠামো, ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকের সংখ্যা বিবেচনায় না নিয়ে তদবিরের চাপে প্রতিষ্ঠান বাছাই করা হচ্ছে। তড়িঘড়ি করে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, নেয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা।

জাতীয়করণের জন্য জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি, জেলা প্রশাসক ও সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে পৃথক পৃথক প্রতিষ্ঠানের তালিকা পাঠানো হচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান ও বিদ্যালয়ের বিদ্যমান অবস্থা এবং প্রস্তাবিত প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের জন্য উপযোগী কি-না সেটা বিবেচনায় না নিয়ে অনেক ক্ষেত্রে প্রস্তাবকারী ব্যক্তি কী পরিমাণ প্রভাবশালী সেটা বিবেচনায় নিয়ে কাজ করছে শিক্ষা প্রশাসন।

দেশের যেসব উপজেলায় কোন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সরকারি কলেজ নেই সেসব উপজেলায় একটি করে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বেসরকারি কলেজকে সরকারিকরণের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। সরকারের এই নীতির সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করি। আমরা এটাও বিশ্বাস করি যে, উল্লেখিত নীতি অনুযায়ী পরিকল্পনা মাফিক এগোলে শিক্ষা খাতে ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব। তবে সার্বিক পরিস্থিতি দেখেশুনে মনে হচ্ছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয়করণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনা, স্বজনপ্রীতি এবং দুর্নীতিই যেন প্রাধান্য পেয়েছে।

আমরা মনে করি, শিক্ষার মান না বাড়িয়ে যেনতেন ভাবে সরকারি স্কুল ও কলেজের সংখ্যা বাড়ালে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়বে ঠিকই কিন্তু এতে করে কার্যত কোন সুফল মিলবে না। আমরা মনে করি, শিক্ষার কোন উন্নতি হবে না। এর ফলে অনেক রাজনৈতিক নেতা নিজের পছন্দসই প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণে তৎপর হবেন।

অনেক পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে নতুন নামসর্বস্ব নতুন প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের তালিকায় চলে আসবে। দেশের শিক্ষার মান বাড়ানোই যদি সরকারের উদ্দেশ্য হয়, তাহলে পরিষ্কার করে বলতে হবে, কীভাবে সেটি করা হবে। এত স্কুল ও কলেজ জাতীয়করণ হচ্ছে, কিন্তু এগুলো দেখার মতো সক্ষমতা আছে কি? জাতীয়করণ করার ক্ষেত্রেই যদি এত নৈরাজ্যের অভিযোগ ওঠে তবে জাতীয়করণের পর এই বিপুল সংখ্যক সরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার হাল যে কি হবে সেটা ভাবতেও শঙ্কিত হতে হয়।

আমরা অবশ্যই এই অসঙ্গতির অবসান চাই। স্কুল-কলেজ জাতীয়করণের নামে দালাল ও অসাধু কর্মকর্তাদের টাকা হাতিয়ে নেয়ার সুযোগ বন্ধ করা উচিত। এসব দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনা বন্ধ করা না হলে শিক্ষা ব্যবস্থায় ধস নামতে দেরি হবে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এসব বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে। জাতীয়করণের ক্ষেত্রে যেসব অনুষঙ্গ প্রাধান্য পাওয়া উচিত তার বাইরে অন্য কোন বিষয় প্রাধান্য পেলে অনিয়মের তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

সূত্র: সংবাদ


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033390522003174