কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ২০৪টি প্রাথমিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রায় শতাধিক স্কুলের হিন্দু শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা থেকে। পর্যাপ্ত হিন্দু শিক্ষক না থাকায় মুসলিম শিক্ষক দিয়ে চলছে হিন্দু ধর্ম শিক্ষার ক্লাস। শিক্ষা বোর্ডগুলো সাধারণ পাঠ্য পুস্তকের পাশাপাশি সব ধর্মের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা’ নামে একটি বই সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করে। কিন্তু উপজেলার শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোন প্রকার হিন্দু শিক্ষক না থাকা, একই স্কুলে একাধিক হিন্দু শিক্ষক কর্মরত থাকা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসের উদাসীনতার কারণেই ধর্মীয় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ার মূল কারণ বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
শিক্ষার্থীদের সট, আদর্শ ও নৈতিকতা সম্পূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য পুঁথিগত বিদ্যার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষা একান্ত প্রয়োজন। কোন ধর্মই মানুষকে খারাপ হতে বলেনি। শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় শিক্ষা নিয়ে বেড়ে উঠলে তাদের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত হয়। মানবতার যথার্থ বিকাশের জন্য ধর্মীয় শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। হিন্দু শিক্ষক সংকট থাকায় বাধ্য হয়েই চলছে এ শিক্ষা কার্যক্রম। এই নিয়ে বিদ্যালয়গুলোর অভিভাবকদের মাঝে রয়েছে চাপা ক্ষোভ। এত করে শিক্ষার্থীরা তাদের ধর্মীয় সঠিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অভিভাবকরা। যার কারণে শিশু বয়সেই অনেক শিক্ষার্থী নৈতিকতা হারিয়ে অন্যায় অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। সমাজে বাড়ছে শিশু অপরাধ। নেশা জাতীয় দ্রব্যের সাথেও আসক্ত হচ্ছে তারা। তাই প্রতিটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা যেন নিজ নিজ ধর্মীয় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে অচিরেই নজর দেবেন কর্তৃপক্ষ সেটাই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আশা।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের সাথে কথা হলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে ধর্মীয় শিক্ষক নেই। ইসলাম ধর্মের শিক্ষকরা বাধ্য হয়ে হিন্দু ধর্ম বিষয়ের পাঠদান করাতে গিয়ে একদিকে শিক্ষকরা যেমন বিভ্রান্ত হন অন্যদিকে শিশু বয়সে ধর্মীয় বিষয়ের প্রকৃত শিক্ষাগ্রহণ থেকে ছাত্রছাত্রীরাও বঞ্চিত হচ্ছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এএনএম মাহবুব আলম জানান, ধর্ম শিক্ষায় কোটা ভিত্তিতে নিয়োগ না হওয়া ও বিষয় ভিত্তিক কোন কোটা না থাকায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।