আমতলী ও তালতলী উপজেলায় প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের ১ হাজার তিনশ’টি পদ রয়েছে। এর বিপরীতে শিক্ষক আছেন ১ হাজার ৪০ জন। শূন্য রয়েছে ২৬০টি পদ। অন্যদিকে ৫১টি বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে বিপুল সংখ্যক শিক্ষক না থাকায় এবং ভবন সংকটের
কারণে আমতলী ও তালতলী উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষায় চলছে বেহাল দশা। আমতলী উপজেলায় ১৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ১৫২ জন প্রধান শিক্ষক ও ৭৪৯ জন সহকারী শিক্ষকসহ মোট শিক্ষক থাকার কথা ৯০১ জন। আছেন ৭৮০ জন। এর মধ্যে ৭৯ জন প্রধান শিক্ষক ও ৪২ জন সহকারী শিক্ষকসহ ১১২ জন শিক্ষকের পদ খালি দীর্ঘদিন ধরে। তালতলী উপজেলায় ৭৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৭৭ জন প্রধান শিক্ষক ও ৩২২ জন সহকারী শিক্ষকসহ ৩৯৯ জন শিক্ষক থাকার কথা।
কিন্তু আছেন ২৬১ জন। ৩৯ জন প্রধান শিক্ষক ও ১০০ জন সহকারী শিক্ষকসহ ১৩৯ জন শিক্ষকের পদ খালি দীর্ঘদিন ধরে। যেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই ওই সব বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে বিদ্যালয়গুলো। এতে সংকটের সমাধান না হয়ে দ্বিমুখী সংকট তৈরি হচ্ছে। একদিকে ক্লাসে পাঠদানে শিক্ষক সংকট, অন্যদিকে ভারপ্রাপ্তরা সঠিকভাবে তাদের সহকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পাড়া। ফলে এসব বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার মান নিম্নমুখী হচ্ছে। শিক্ষক সংকটের কারণে তালতলী উপজেলায় কয়েকটি বিদ্যালয় প্রায় বন্ধের উপক্রম হয়েছে।
এর মধ্যে মৌরুভী ও কলা রঙ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাত্র একজন করে শিক্ষক রয়েছেন। তিনি কখনও ছুটি কিংবা অসুস্থ থাকলে বিদ্যালয় বন্ধ থাকে। বাদুগাছা ও উত্তর গেণ্ডামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আছেন দু’জন করে শিক্ষক। প্রধান শিক্ষক অফিসের কাজে প্রায়ই উপজেলায় থাকেন। একজন শিক্ষক ক্লাস পরিচালনা করেন। একজন শিক্ষক পাঁচটি ক্লাসে লেখাপড়া করাতে গিয়ে কোনো লেখাপড়াই হয় না। তালতলীর অধিকাংশ বিদ্যালয়েরই এ রকম করুণ দশা। তালতলী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী মনিরুজ্জামান রিপন বলেন, প্রতিটি বিদ্যালয়ে অন্তত পাঁচটি করে পদ সৃষ্টি করা দরকার তা নাহলে শিক্ষক সংকট দূর হবে না।
অন্যদিকে আমতলী ও তালতলী উপজেলায় রয়েছে ভবন সংকট। আমতলী উপজেলায় ৩৭টি বিদ্যালয় ভবন ও তালতলী উপজেলায় ১৪টি ভবনসহ দুই উপজেলায় মোট ৫১টি ভবন রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। দীর্ঘদিন ধরে এসব ভবনের কোনো সংস্কার না করায় ভবনগুলো এতই ঝুঁকিপূর্ণ যে, এর ভেতরে এখন ক্লাস করা সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।
আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মজিবুর রহমান বলেন, শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের চাহিদা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে যেসব ভবন জরাজীর্ণ রয়েছে সেই ভবনগুলো নির্মাণের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। টাকা পাওয়া গেলে ভবনগুলো দ্রুত নির্মাণ করা হবে। বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল মজিদ বলেন, শূন্যপদের বিপরীতে শিক্ষকের চাহিদা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে। নতুন নিয়োগের পর শিক্ষকের এ সংকট থাকবে না।