অধ্যক্ষের কক্ষে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মাথা ফাটাফাটি

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি |

চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে মারামারিতে জড়াল ছাত্রলীগের দুই পক্ষ, তাতে মাথা ফাটল দুজনের।

মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ আবুল হাসানের কক্ষে এই ঘটনা ঘটে বলে অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ঘিরে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন ইমরান আহমেদ ও মো. নুরুত্তজা।

বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে এক পক্ষের নেতৃত্বে আছেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম ও সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজের অনুসারীরা।

অন্য পক্ষের নেতৃত্বে আছেন ওবাইদুল হক, বেলাল, সাইফুল ও রাজুসহ কয়েকজন। তারা নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

এই অংশটি কলেজের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নিয়ে অধ্যক্ষকে হুমকি দিতে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

অধ্যক্ষ আবুল হাসান  বলেন, “গতকাল কয়েকজন এসেছিল। তারা বলে, কলেজে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা করতে পারব না। তাদের দাবি, স্পোর্টস আয়োজনের আগে কেন তাদের সাথে আলাপ করিনি?

“কলেজে ছাত্রলীগের একটি কমিটি আছে। তাদের সাথে আমরা আলাপ করেছি। সবার সাথে কী কথা বলা সম্ভব?”

তিনি বলেন, “আজ ‍দুপুরেও তারা কয়েকজন আসে। তাদের ৫০ প্যাকেট খাবার দেওয়া হয়েছিল। তারা বলল, তাদের ২০০ প্যাকেট লাগবে। তাদের বলেছি মাঠে যেতে। মাঠে গেলে সবাই খাবার পাবে। তারপরও তারা টেবিল চাপড়ে কথা বলেছে।”

এরপর ছাত্রলীগের অন্য পক্ষও সেখানে উপস্থিত হলে বেঁধে যায় সংঘর্ষ, খবর পেয়ে সেখানে যায় পুলিশ।

অধ্যক্ষ বলেন, “আমার কক্ষে উপাধ্যক্ষ, শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজন শিক্ষক ছিলেন। তাদের সামনেই দুই পক্ষ মারামারিতে জড়িয়েছে। পরে পুলিশ এসে তাদের বের করে দেয়।”

ছাত্রলীগের এক পক্ষের নেতা ওবাইদুল হক বলেন, “ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আনুষঙ্গিক আয়োজন যেমন- খাবার, ক্যাপসহ অন্য উপকরণ নিয়ে কথা বলতে গিয়েছিলাম। বেরিয়ে আসার সময় আমাদের ওপর আক্রমণ করা হয়। আমাদের দুজনের মাথা ফাটিয়ে দেয় তারা।”

 অধ্যক্ষসহ শিক্ষকদের হুমকি দেওয়া এবং টেবিল চাপড়ে কথা বলার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “আগে কলেজে যে কোনো আয়োজনেই তিন পক্ষের (কলেজ ছাত্রলীগের) সাথে আলোচনা করা হত। এবার আমাদের সাথে কোনো আলোচনা হয়নি। আমরা সামগ্রিকভাবে আয়োজন করতে চেয়েছিলাম।”

কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী এবং সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজ সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

কমিটি ঘোষণার আগে কলেজ ছাত্রলীগের তিনটি পক্ষের মধ্যে পরস্পরবিরোধী অবস্থান ছিল। কমিটি হওয়ার পর মাহমুদুল করিম ও সুভাষ মল্লিক সবুজ একযোগে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম  বলেন, “কলেজে ছাত্রলীগের বৈধ কমিটি থাকার পরও মেয়র গ্রুপের কয়েকজন গতকাল গিয়ে অধ্যক্ষসহ শিক্ষকদের হুমকি দেয় এবং ক্রীড়া প্রতিযোগিতা করতে দেবে না বলে ভয় দেখায়।

“আজ তারা আবারও অধ্যক্ষের কক্ষে গিয়ে হুমকি দেয়। এসময় আমি ও সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজ সেখানে যাই। আমাদের সাথে জুনিয়র অনেক শিক্ষার্থী ছিল।”

অন্য পক্ষের মাথা ফাটানোর অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “হাতাহাতি হয়, তাতে কেউ হয়ত সামান্য আঘাত পেয়েছে। তবে কারও মাথা ফাটেনি।”

মাহমুদুল বলেন, যারা অধ্যক্ষসহ শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করেছে, তাদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হোক।

ঘটনার বিষয়ে কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই কামাল হোসেন বলেন, “১২টার দিকে দুই পক্ষের সামান্য হাতাহাতি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়।”

বুধবার চট্টগ্রাম কলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের দিন।

এই উপলক্ষে ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সংখ্যাক পুলিশ মোতায়েন আছে বলে জানান এসআই কামাল।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ - dainik shiksha স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে - dainik shiksha শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0061519145965576