অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

জয়পুরহাট প্রতিনিধি |

জয়পুরহাট সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) অধ্যক্ষ প্রকৌশলী দেলোয়ার উদ্দিন আহম্মেদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। এত কিছুর পরও বহাল তবিয়তে আছেন তিনি।

কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে জয়পুরহাটে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ইলেকট্রিক্যাল, কম্পিউটার, গার্মেন্টস, ইলেকট্রনিকস, অটোমোটিভ ও অটোক্যাড নামে ছয়টি ট্রেড নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম শুরু করে। ট্রেডগুলোতে রাজস্ব খাতে একজন প্রশিক্ষক ছাড়া অবশিষ্টগুলোতে খণ্ডকালীন প্রশিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ জানুয়ারি অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পান প্রকৌশলী দেলোয়ার উদ্দিন আহম্মেদ। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তিনি জয়পুরহাট টিটিসিকে অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেন বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।

জানা গেছে, বিআরটিএর ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কোর্সের সনদ না থাকা সত্ত্বেও অধ্যক্ষ তার শ্যালককে সান্ধ্যকালীন মোটর ড্রাইভিং প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। এ ছাড়া প্রশিক্ষণার্থীদের সারাবছরের খাবার পরিবেশনসহ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করেন অধ্যক্ষের শ্যালক। শ্যালকের মাধ্যমে তদবির না করলে কোনো কাজ হয় না এই কর্মকর্তার অফিসে।

টিটিসির কয়েকজন প্রশিক্ষণার্থী জানান, বাইরে নিয়ে ড্রাইভিং শেখানোর কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ থিওরি ক্লাস আর ক্যাম্পাসের ২০০ গজ জায়গায় স্টিয়ারিং ধরা শেখাচ্ছেন। এই প্রশিক্ষণের ফলে শুধু লাইসেন্সই জুটবে, দক্ষ ড্রাইভার হওয়া যাবে না।

একাধিক নারী প্রশিক্ষণার্থীর অভিযোগ, সরকারিভাবে খাবারের জন্য প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীর জন্য তিন হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও নিম্নমানের খাবার দেওয়া হয়। তাদের খাবারের দায়িত্বে থাকেন অধ্যক্ষের শ্যালক ও স্ত্রী।

কয়েকজন কর্মচারী জানান, বেতনের টাকা থেকেও অধ্যক্ষকে সন্তুষ্ট করতে হয়। খণ্ডকালীন প্রশিক্ষক হওয়ায় কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে না।

ইনস্ট্রাক্টর (রাজস্ব) জি এস সুলতান আল-আমিন জানান, আট মাস ধরে নিজের ইচ্ছামতো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন অধ্যক্ষ প্রকৌশলী দেলোয়ার উদ্দীন আহমেদ। ৪০ দিন আগে প্রশিক্ষণার্থীদের বৃত্তির দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা তুলে নিজ পকেটে ভরেছেন অধ্যক্ষ। অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসী দিয়ে তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।

তবে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে অধ্যক্ষ প্রকৌশলী দেলোয়ার উদ্দীন আহমেদ বলেন, শ্যালক ওয়াসিমকে ড্রাইভার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সে দুই মাস মেয়াদি খণ্ডকালীন প্রশিক্ষকেরও দায়িত্ব পালন করছে। এর বাইরে কিছুই না।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানান, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0062320232391357