মোহনপুরের কেশরহাটে ভুয়া দলিলে ১১ বিঘা মাদরাসার জমি জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল কাদেরের বিরুদ্ধে। আবদুল কাদের পৌর এলাকার সাঁকোয়া-বাকশৈল কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ। এনিয়ে এলাকাবাসী জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাঁকোয়া-বাকশৈল কামিল মাদরাসাটি অত্যন্ত পুরাতন প্রতিষ্ঠান। মাদরাসার উন্নতিকল্পে বিভিন্ন দাতা শতাধিক বিঘা জমি দান করেছেন। এর মধ্যে মাদরাসার অধ্যক্ষ আবদুল কাদের কেশরহাট পৌর এলাকার সাাঁকোয়া, বাকশৈল ও হরিদাগাছি মৌজার প্রায় ১১ বিঘা জমি ভূয়া দাতা সাজিয়ে নিজের নামে লিখে নেন। এরপর দলিলটি কেশরহাট ভূমি অফিসে খারিজের জন্য দেয়া হলে তহসিলদার জমির দাতাদের কাছে খারিজ নোটিস দিলে এ তথ্য ফাঁস হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে জমিরদাতারা দ্রুত খারিজ বন্ধের আবেদন দেন। এছাড়াও উপজেলা ভূমি অফিসসহ মাদরাসা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিকে অবগত করেন।
গত সোমবার রাজশাহী জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন সাঁকোয়া গ্রামের মৃত সেফাতুল্লার ছেলে মোবারক আলী, বরিঠা গ্রামের মৃত রহমতুল্লাহর ছেলে শরিফুল ইসলাম, ওমর ফারুক, ইসমাইল হোসেন, কিবরিয়া। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে সাঁকোয়া, বাকশৈল, হরিদাগাছি মৌজায় ওই মাদরাসায় জমি দান করেন, কেরামতুল্লাহ, সুন্দর বিবি, লোকমান মন্ডল, আনিস মন্ডল, কছিম উদ্দিন, তাহেরা খাতুন, আনিস মল্লিক, আমির উদ্দিন যা মাদরাসা ভোগ দখল করে আসছিল।
একজন ওয়ারিশ ওমর ফারুক বলেন, গত ৮ মার্চ মোহনপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) অফিস থেকে খারিজ নোটিস (খারিজ কেস নম্বর- ৪-৯৩৩/৯১/১৮-১৯ প্রঃ ৯৩৫/৯-১/১৭-১৮) পাঠানো হয়। জমিদাতাদের প্রতিপক্ষ করে অধ্যক্ষ আবদুল কাদের জমি খারিজের আবেদনটি করেন। এরপর জালিয়াতির বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও মাদরাসা পরিচালনা পরিষদের সভাপতিকে অবগত করা হয়।
মাদরাসা অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল কাদের জমি জালিয়াতির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘বিষয়টি সভাপতিসহ সবাই জানেন। সংবাদ করবেন প্রতিবাদ জানাবো।’
সাঁকোয়া-বাকশৈল কামিল মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কেশরহাট পৌরসভার মেয়র শহিদ বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কমিটির মিটিং ডাকা হয়। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। সাময়িকভাবে খারিজ বাতিলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে মাদরাসার অডিট হয়নি, অডিটের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। মাদরাসার উন্নয়নের স্বার্থে কোনো প্রকার অনিয়ম প্রশ্রয় দেয়া হবে না। জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে সুষ্ঠু ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দেন।
মোহনপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মির্জা ইমাম উদ্দিন বলেন, দলিলের সার্টিফাইড কপি দিয়ে জমি খারিজের আবেদন করেছিলেন আবদুল কাদের। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে জমির ওয়ারিশগণের কাছে খারিজ নোটিস পাঠানো হয়।