শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বের ১৮৫ দেশে জাতীয়ভাবেই বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৫৪ কোটি ২৪ লাখ ১২ হাজার শিক্ষার্থী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। তবে প্রায় সব দেশই অনলাইনে শিক্ষাব্যবস্থা চালু রেখেছে। গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ২৯ মার্চ থেকে বাংলাদেশে টেলিভিশনে ক্লাস প্রচার করা হলেও বিশ্বের অন্য দেশে গুগল ক্লাসরুম, জুম, হ্যাংআউট, স্কাইপের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে লাইভ ক্লাসরুমের মাধ্যমে পাঠদান পরিচালনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পেজ বা গ্রুপে সব সময়ের জন্য চলে লেখাপড়া।
দৈনিক শিক্ষার পাঠকেরা বলেছেন, বাংলাদেশে যেভাবে টিভিতে ক্লাস সম্প্রচার করা হচ্ছে তাতে শিক্ষকের সঙ্গে কথাবার্তা আদান-প্রদান সম্ভব নয়। শিক্ষক যা বোঝালেন তা না বুঝলেও কিছু করার নেই। কিন্তু গুগল ক্লাসরুম, জুমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে শিক্ষককে প্রশ্ন করার সুযোগ আছে। এরপর শিক্ষক বিষয়টি বুঝিয়েও দিতে পারেন। গত কয়েকবছরে দেশের সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে ল্যাপটপ প্রজেক্টরসহ সব সুবিধা রয়েছে। সেগুলো ব্যবহার করলেই লাইভ ক্লাস প্রচার করা সম্ভব।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য টেলিভিশনে ক্লাস সম্প্রচার শুরু হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরও টিভিতে ক্লাস প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে।
অভিভাবকরা বলছেন, লাইভ ক্লাস প্রচারে নিজ নিজ স্কুলকে উদ্যোগী হতে হবে। প্রতিটি ক্লাসের শিক্ষকরা তাঁদের শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ক্লাসের ব্যবস্থা করবেন।
তানিয়া ফেরদৌসি নামে একজন অভিভাবক দৈনিক শিক্ষাকে লিখেছেন, ‘জুম অ্যাপ ব্যবহার করে ক্লাস নেওয়া যায়। ক্লাসের ভিডিও রেকর্ডটা ওয়েবসাইটে দিয়ে দিলে সবাই পেয়ে যাবে।’ যুক্তরাষ্টসহ বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা লিখেছেন, তাঁদের ওখানেও অনলাইনে নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে। কিন্তু কোথাও টিভিতে ক্লাস প্রচারের কথা জানা যায়নি।
নিউ ইয়র্ক থেকে আরিফ নেওয়াজ ফরাজী জানান, তাঁর দুই সন্তান একটি স্কুলে পড়ে। প্রতিটি বিষয়ের শিক্ষকের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ আছে। ওই গ্রুপে সব অভিভাবক যুক্ত আছেন। সেখানে পড়ালেখা দেওয়া-নেওয়া হচ্ছে। কোনো অভিভাবকের প্রশ্ন থাকলে তা লিখছেন। শিক্ষকরা এর উত্তর দিচ্ছেন। অর্থাৎ শিক্ষকের সঙ্গে সব সময়ের জন্য যোগাযোগ হচ্ছে।’
তবে বাংলাদেশেও স্বল্পসংখ্যক বাংলা মাধ্যমের বিদ্যালয়, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনের নানা মাধ্যমে ক্লাস নিচ্ছে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর আফসারা মিজানুর খান বলেছেন, ‘আমি বাসায় বসেই ক্লাস করছি। অ্যাসাইনমেন্ট, ডিজাইন সব কিছুই অনলাইনে সাবমিটও করছে। একদম নিয়মিত ক্লাসের মতোই, কোনও হেরফের নেই।’
রাজধানীর ছায়ানট পরিচালিত নালন্দা বিদ্যালয় চালু করেছে গুগল ক্লাস।
আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি হওয়ায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ।