অপহরণ নয়, স্বেচ্ছায় ভারতে গিয়েছিলেন শিক্ষিকা

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি |

চট্টগ্রাম থেকে সাত মাসে আগে ‘নিখোঁজ’ গানের শিক্ষিকা মনিকা বড়ুয়া রাধাকে উদ্ধারের পর পুলিশ বলেছে, তিনি নিজের ইচ্ছায় সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে গিয়েছিলেন। সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্ত থেকে মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর)  মনিকাকে ‘উদ্ধার’ করার পর বুধবার (৭ নভেম্বর) রাতে তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়।

শিক্ষিকা মনিকা বড়ুয়া

বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম বলেন, “মনিকা স্বেচ্ছায় ভারতে গিয়েছিলেন। শুরুতে আমরা মনে করেছিলাম তাকে অপহরণ বা পাচার করা হয়েছে।

“পরে জানতে পারি তিনি নিজ ইচ্ছায় গেছেন। যারা তার সন্ধান চেয়ে মানববন্ধন করেছেন তারাও জানতেন মনিকা ভারতে আছেন। এটা আমাদের জানা থাকলে আরও আগেই তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হত।” মনিকা বড়ুয়ার সন্ধান দাবিতে তার বোন ও পরিবারের সদস্যরা চট্টগ্রাম ও ঢাকায় কয়েক দফা মানববন্ধন করেন। তারা সে সময় অভিযোগ করেন, মনিকাকে উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ‘সন্তোষজনক’ নয়।

পুলিশ কর্মকর্তা আমেনা বেগম বলেন,এটা একটা সেনসেটিভ ঘটনা। তাই ঘটনার পর থেকেই আমরা সর্বোচ্চ সক্রিয় ছিলাম। কমলেশ কুমার মল্লিক নামে এক ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে চলে যাওয়ার পর মনিকা সেখানে তাকে বিয়ে করেন বলে জানানো হয় পুলিশের সংবাদ সম্মেলনে।

গানের টিউশনিতে যাওয়ার কথা বলে গত ১২ এপ্রিল চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজারের হাই লেভেল রোডের বাসা থেকে বের হয়ে ৪৫ বছর বয়সী মনিকা আর ফেরেননি বলে জানানো হয়েছিল তার পরিবারের পক্ষ থেকে। মনিকার স্বামী দেবাশীষ বড়ুয়া ১৩ এপ্রিল এ বিষয়ে নগরীর খুলশি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ২৮ এপ্রিল সেটি ‘অপহরণ’ মামলায় রূপান্তর করা হয়।

দেবাশীষ শুরু থেকেই দাবি করে আসছিলেন, তাদের মধ্যে কোনো দাম্পত্য সমস্যা নেই। কীভাবে, কেন মনিকা নিখোঁজ হয়েছেন, তা তিনি বুঝতে পারছেন না। দুই মেয়ের জননী মনিকা নগরীর কাতালগঞ্জের লিটল জুয়েলস স্কুলে গান শেখাতেন। তার বড় মেয়ে নগরীর একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে এবং ছোট মেয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা আমেনা বেগম বলেন, গত ৪ নভেম্বর ঢাকার ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়ক থেকে কমলেশ কুমার মল্লিককে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে কমলেশ জানান, তিনি নিজেই ১২ এপ্রিল চট্টগ্রাম থেকে বাসে করে মনিকাকে বেনাপোলে নিয়ে যান। পরে পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই তাকে নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন।

পুলিশ বলছে, কলকাতায় মনিকার নতুন নাম দেওয়া হয় অনামিকা মল্লিক। স্বামী হিসেবে কমলেশ মল্লিকের নাম উল্লেখ করে সেখানে মনিকার জন্য পরিচয়পত্র ও অন্যান্যা কার্ডও তৈরি করা হয়। মন্দিরে গিয়ে ধর্মীয় রীতিতে তারা বিয়ে করলেও তা রেজিস্ট্রি করা হয়নি।

চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, মনিকা কলকাতার একটি অ্যাপার্টমেন্টে আছেন জানতে পেরে ‘কৌশলে’ তাকে মঙ্গলবার ভোমরা সীমান্তে আনার ব্যবস্থা করা হয়। আগে থেকেই সেখানে অবস্থান নিয়ে থাকা পুলিশ তাকে নিয়ে পরে চট্টগ্রামে আসে।

তবে কী কৌশলে কাগজপত্র ছাড়া মনিকাকে আবার দেশে ফেরানো হল- সে বিষয়টি স্পষ্ট করেননি এ পুলিশ কর্মকর্তা।

অন্যদের মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মো. কামরুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0098030567169189