লাকসাম থেকে অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া এক ছাত্রীকে (১৩) অপহরণের ৩৭ দিন পর চট্টগ্রাম হতে উদ্ধার করেছে র্যাব। এসময় র্যাব অপহরণকারী চক্রের আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করে চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। গত ৫ই ফেব্রুয়ারি ওই কিশোরীকে কৌশলে অপহরণ করে চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকার একটি বাড়িতে আটকে রেখে ৫টি চোরাই মোবাইল ফোনে অপহরণকারীরা ওই ছাত্রীর পরিবারের নিকট মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল। পরে তারা ওই কিশোরীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে এবং ইয়াবা সেবন করিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং দেহ ব্যবসা করায়।
বৃহস্পতিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান কুমিল্লাস্থ র্যাব-১১ সিপিসি-২ এর ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার শেখ বিল্লাল হোসেন। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে ফেনী জেলা সদরের নোয়াবাদ গ্রামের মৃত আবদুস সাত্তারের ছেলে এয়াকুব আলী মিন্টু ওরফে মিলন (৩১), তার স্ত্রী জেসমিন (২৪) চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকার ভাড়াটিয়া বগুড়া জেলার আদমদীঘি থানার চাটমোহর গ্রামের আফজ মণ্ডলের মেয়ে আফরোজা আক্তার আশা ওরফে সুমি (৩২) ও মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানার মুনসুরপুর গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে মো. আবদুল মোমিন (৩০)।
জানা যায়, ঘটনার কিছুদিন আগে এয়াকুব আলী মিন্টু ওরফে মিলন চট্টগ্রাম থেকে লাকসামে এসে ওই কিশোরীর পাশের বাসার একটি কক্ষ ভাড়া নেয় এবং তারা অপহরণের উদ্দেশ্যে ওই কিশোরীকে টার্গেট করে তার পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। একপর্যায়ে গত ৫ই ফেব্রুয়ারি মিলন ও তার স্ত্রী বেড়াতে যাবে এবং বিকালে ফিরে আসবে এমন কথা বলে ওই কিশোরীকে তার মার নিকট থেকে নিয়ে বের হয়। পরে কৌশলে নেশা জাতীয় পানীয় পান করিয়ে লাকসাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনে করে চট্টগ্রাম নিয়ে যায়।
এরপর তারা ওই কিশোরীর মায়ের মোবাইল ফোনে মুক্তিপণ দাবি করতে থাকে। এ ঘটনায় ওই কিশোরীর মা ৮ই ফেব্রুয়ারি লাকসাম থানায় জিডি করেন এবং ১৯শে ফেব্রুয়ারি র্যাব কার্যালয়ে অভিযোগ করেন। বৃহস্পতিবার প্রেসব্রিফিংয়ে কুমিল্লাস্থ র্যাব-১১ সিপিসি-২ এর ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার শেখ বিল্লাল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর ওই কিশোরীকে উদ্ধারে আমরা অভিযানে মাঠে নামি এবং মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে অপহরণকারী চক্রের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে বুধবার চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকার একটি বাড়ি থেকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধারসহ অপহরণকারী চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করি। জিজ্ঞাসাবাদে অপহরণকারী চক্রের গ্রেপ্তারকৃত সদস্যরা জানিয়েছে, তারা ওই ছাত্রীকে কৌশলে অপহরণের পর তার পরিবারের নিকট মুক্তিপণ দাবি করেছে এবং ইয়াবা সেবন করিয়ে নিজেরা ধর্ষণসহ জোরপূর্বক দেহ ব্যবসা করিয়েছে। অপহরণকারী এ চক্রের অপর সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।