অবশেষে আফগানদের হারাল বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

প্রথমে বল হাতে, পরে ব্যাট হাতে দলকে ভরসা দিলেন সাকিব আল হাসান। অধিনায়ক হিসেবে যতটা দায়িত্ব নেয়া প্রয়োজন, পুরোটাই নিলেন নিজের কাঁধে। তাতেই অবশেষে আফগানবধ সম্ভব হলো। ভারতের মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর এই ত্রিদেশীয় সিরিজেও প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ।

এবার আর সে সুযোগ দিল না টাইগাররা। চট্টগ্রামে সাকিবের দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ভর করে আফগানিস্তানকে ৪ উইকেট আর এক ওভার হাতে রেখেই হারিয়েছে স্বাগতিক দল।

বল হাতে ৪ ওভারে ২৪ রান নিয়ে নিয়েছিলেন ১ উইকেট। পরে ব্যাট হাতে দলের বিপদের মুখে করলেন অপরাজিত এক হাফসেঞ্চুরি। ৪৫ বলে ৮ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় সাকিব অপরাজিত থাকেন ৭০ রানে।

লক্ষ্য বড় নয়, মাত্র ১৩৯ রানের। তবে আফগানিস্তানের বোলারদের সামনে পড়লে যেন ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। কি করবেন ঠিক বুঝে ওঠতে পারেন না। যে ম্যাচে সহজেই জেতার কথা, সেই ম্যাচেও তাই উত্তেজনা ছড়ালো।

রানের চাপ নেই, টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ার শঙ্কা নেই। তবুও আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাথা ঠান্ডা করে খেলতে পারেননি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। ১২ রান তুলতেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে বসে স্বাগতিক দল।

ইনিংসের তৃতীয় ওভারে মুজিবুর রহমানকে তুলে মারতে গিয়ে ৩০ গজের বৃত্তও পার করতে পারেননি লিটন দাস। ১০ বলে মাত্র ৪ রানেই ধরেন সাজঘরের পথ। এরপর নাজমুল হাসান শান্ত আরও একবার ব্যর্থ। ৮ বলে ৫ করে অভিষিক্ত নাভিন উল হকের বলে মিডউইকেটে ক্যাচ হন বাঁহাতি এই ওপেনার।

তবে তৃতীয় উইকেটে সে চাপ সামলে ওঠেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আর মুশফিকুর রহীম। ১৬ রানের মাথায় জীবন পান মুশফিক। মোহাম্মদ নবীর বলে সহজ ক্যাচ ফেলে দেন নাজিব তারাকাই। তবে তারপর বেশিদূর যেতে পারেননি। ২৫ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলে জানাতের শিকার হন উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান। একটিই ছক্কা হাঁকান মুশফিক, সেটি আউট হওয়া ওই ওভারেই।

৪৪ বলে ৫৮ রানের জুটিটি ভাঙার পর উইকেটে আসেন মাহমুদউল্লাহ। তবে সুবিধা করতে পারেননি। রশিদ খানের বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে ৮ বলে করেন মাত্র ৬ রান। এরপর আফগান লেগস্পিনারের বলে স্ট্যাম্প ছেড়ে বোল্ড হন আফিফ হোসেনও (২)।

তবে সাকিব একটা প্রান্ত ধরে ঠিকই দলকে এগিয়ে নিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সঙ্গী ছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন (১২ বলে অপরাজিত ১৯ রান)।

এর আগে ভালো একটা শুরুর পরও টাইগার বোলারদের তোপে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে আফগানিস্তানের ইনিংস থেমে যায় ৭ উইকেটে ১৩৮ রানে।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা বেশ ধীরেসুস্থে করেছিল আফগানিস্তান। আসলে টাইগার দুই পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন আর শফিউল ইসলাম দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করছিলেন। প্রথম তিন ওভারে আফগানরা তুলতে পারে মাত্র ১২ রান।

ইনিংসের তখন দ্বিতীয় ওভার মাত্র। শফিউল ইসলামের পঞ্চম ডেলিভারিটি আকাশে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন রহমানউল্লাহ। ফাইন লেগে দাঁড়িয়ে সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন মাহমুদউল্লাহ। রহমানউল্লাহ তখন মাত্র ২ রানে।

এরপরই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন আফগান দুই ওপেনার। আলাদা করে অবশ্য বলতে হয় হজরতউল্লাহ জাজাইয়ের কথা। তিনিই মূলত টাইগার বোলারদের কোনঠাসা করে দেন। চার-ছক্কায় গরম করেন মাঠ।

ভয়ংকর এই ব্যাটসম্যানকে যখন কোনোভাবেই আটকানো যাচ্ছিল না, তখন দশম ওভারে আফিফ হোসেনের হাতে বল তুলে দেন সাকিব আল হাসান। আর বল হাতে নিয়ে প্রথম ওভারেই দলকে সাফল্য এনে দেন আফিফ।

তার ঘূর্ণি বলটিতে সুইপ খেলতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে মোস্তাফিজুর রহমানে সহজ ক্যাচ হন হজরতউল্লাহ। ৩৫ বলে ৬ চার আর ২ ছক্কায় আফগান ওপেনার তখন হাফসেঞ্চুরির দোরগোড়ায় (৪৭ রানে)।

এর এক বল বিরতি দিয়ে আসগর আফগানের উইকেটটিও তুলে নেন আফিফ। নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ হন শূন্য রানে। আফগানিস্তানের বিপদের শুরু তখন থেকেই।

পরের ওভারে রহমানউল্লাহ গুরবাজকে (২৭ বলে ২৯) ফিরতি ক্যাচ বানিয়ে ফেরান মোস্তাফিজ। মাত্র ৪ রান করে সাকিবের বলে এলবিডব্লিউ হন মোহাম্মদ নবী। এরপর আফিফের ওভারে আরও একটি উইকেট হারায় আফগানরা। এবার রানআউট গুলবাদিন নাইব (১)। ৯৫ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে আফগানিস্তান।

সেই ধাক্কাই আর সামলে উঠতে পারেনি সফরকারিরা। টাইগার বোলারদের চাপে পরের ব্যাটসম্যানদের কেউ আর সেভাবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি। শফিকুল্লাহ ১৭ বলে ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন। রশিদ করেন ১৩ বলে ১১।

বাংলাদেশের পক্ষে বল হাতে সবচেয়ে সফল আফিফ হোসেন। ৩ ওভারে মাত্র ৯ রানে ২টি উইকেট নেন তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0052058696746826