অবসর-কল্যাণ অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা

মুরাদ মজুমদার ও রুম্মান তূর্য |

বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী অবসর বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্ট অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়েছে। রাজধানীর পলাশীর ব্যানবেইস ভবনে ভাড়ায় থাকে অবসর ও কল্যাণ অফিস। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ রোববার সকাল এগারোটার দিকে হাজার হাজার শিক্ষকের মিছিল রাজধানীর পলাশীর মোড়ে পুলিশের দেয়া ব্যারিকেড আটকা পড়ে। প্রথমে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সারাদেশ থেকে আগত শিক্ষকরা জড়ো হন। সেখান থেকে অবসর ও কল্যাণ অফিসের দিকে অগ্রসর হওয়ার পরপরই পলাশীর মোড়ে আগে থেকে বেরিকেড দিয়ে অবস্থান নেয়া পুুলিশ শিক্ষকদের বাধা দেয়। ঘন্টাখানেক অবস্থান করে তারা ঈদের পরে আরো কঠোর কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণা দিয়ে ঘেরাও কর্মসূচি শেষ করেন। 

ছবি : মুরাদ মজুমদার ও রুম্মান তূর্য

বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ ফান্ডে ১০ শতাংশ চাঁদা কর্তন আদেশ বাতিল ও পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাস এবং কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বাড়তি কাগজে বাড়তি ভোগান্তির অবসান দাবিতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ব্যানারে এ ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। আওয়ামী লীগপন্থি এ শিক্ষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ কাওছার আলী শেখ জানান পুলিশ তাদেরকে বাধা দিয়েছে। তবে, পুলিশ তাদের প্রতি বিরুপ নন।

এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা সরকারি শিক্ষকদের মতো অবসর ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পান না। এর বদলে তাদেরকে এককালীন কিছু আর্থিক সুবিধা দেয়া হয়। এর বিনিময়ে চাকরিজীবনের পুরো সময়েই তাদের বেতন-ভাতার সরকারি অংশ থেকে মোট দশ শতাংশ টাকা চাঁদা হিসেবে কেটে রাখা হয়। অবসর ও কল্যাণে এই চাঁদার হার যথাক্রমে ৪ ও ২ শতাংশ ছিলো। কিন্তু সম্প্রতি তা বাড়িয়ে মোট ১০ শতাংশ করেছে সরকার। কিন্তু এর জন্য বাড়তি কোনো সুবিধা দেয়া হবে না শিক্ষকদের। আর এখানেই আপত্তি শিক্ষকদের। এ জন্যই আন্দোলন। এমনটাই সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ মো: বজলুর রহমান মিয়া। শীঘ্রই সংবাদ সম্মেলন করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দেবেন বলে সাংবাদিকদের জানান তিনি।  

জানা যায়, সারাদেশ থেকে দলে দলে শিক্ষকরা অবসর ও কল্যাণ অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ নেন। বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যানার নিয়ে হাজির হন শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ সময় তারা বিভিন্ন ধরণের স্লোগান দেন। ‘দুর্ভোগের অপর নাম অবসর-কল্যাণ, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের কাছ থেকে দুইবার কেন কাগজ চাওয়া হয়’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষকরা। 

আরও পড়ুন: শিক্ষার এক্সক্লুসিভ ভিডিও দেখতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

এর আগে গত ২৪ জুলাই প্রতিটি জেলা শহরে এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘প্রতীকী অনশন’ পালন করেন তারা। প্রতীকী অনশনে মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণ, ঈদের আগেই সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের পূণাঙ্গ বোনাস দেয়া, অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য ১০ শতাংশ চাঁদা কর্তনের প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জানান শিক্ষক নেতারা।

অতিরিক্ত চাঁদা কর্তনের জন্য দশ বছর ধরে কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য-সচিব পদে  থাকা অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুকে দায়ী করেন শিক্ষকরা। নতুন সংগঠন স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদকেও দায়ী করা হয়। এছাড়াও কল্যাণের সদস্য-সচিব  অধ্যক্ষ  শাহজাহান আলম সাজুর পদত্যাগ দাবি করেন কর্মসূচিতে অংশ নেয়া শিক্ষকরা।

শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, সদস্য-সচিবরা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ভোগান্তি কমাতে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছেন না। নতুন স্কেলে কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পাওয়ার জন্য দুইবার কাগজ দিতে বাধ্য করা হয় অসহায় শিক্ষকদের।

ঘেরাও কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য বাবু রঞ্জিত কুমার সাহা, সিনিয়র সহ সভাপতি অধ্যক্ষ মো. আবুল কাশেম, সহ সভাপতি আলী আসগর হাওলাদার, বেগম নুরুন্নাহার,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবু জামিল মো. সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন, অর্থ সম্পাদক মোস্তফা জামান খান, দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, গ্রন্থাগার সম্পাদক অশোক কান্তি গুহ, সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফাহমিদা রহমান, সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শাহানা বেগম, কেন্দ্রীয় সদস্য, আজম আলী খান, প্রবীর রঞ্জন, মনোরঞ্জন মণ্ডলসহ হাজার হাজার শিক্ষক ও কর্মচারী।

চায়ের দাওয়াত প্রত্যাখ্যান: কর্মসূচি চলাকালে চায়ের নেতাদের চায়ের দাওয়াত দেন কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য-সচিব মো. শাহজাহান আলাম সাজু। কিন্তু শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে সাংবাদিকদের জানানো হয়। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032601356506348