জাল সনদে টাকার বিনিময়ে অবৈধ নিয়োগ লাভের অভিযোগে ৭ শিক্ষকের এমপিও বাতিল করেছে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর। বাংলাদেশ কারিগিরি শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত পৃথক অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে বলে দৈনিক শিক্ষাকে নিশ্চিত করেছেন কর্মকর্তারা।
অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, নাটোর লালপুরের বরমহাটি সমবায় উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান, বাংলার সহকারী শিক্ষক রোকেয়া বেগম, কম্পিউটার বিষয়ের প্রদর্শক ফিরোজা খাতুন, নরসিংদীর পলাশ শিল্পাঞ্চল কলেজের কম্পিউটার ডেমোনেস্ট্রেটর মো. জহিরুল হক ভুঞা, রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার পীরগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক মো. মোজাফ্ফর হোসেন, রংপুর পীরগঞ্জ উপজেলার মাদারহাট টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক মো. শরিফুল ইসলাম এবং ময়মনসিংহ মুক্তাগাছার হাজী কাশেম আলী টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজের কম্পিউটার অপারেশন বিষয়ের প্রভাষক ফৌজিয়া ইয়াসমীনের এমপিও বাতিল করা হয়েছে।
অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাকে জানান, বিভিন্ন সময়ে এসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে জাল সনদে নিয়োগ, বিধি বহির্ভূত ও অবৈধ নিয়োগ লাভের অভিযোগ এসেছে। অভিযোগগুলো তদন্ত করে এসব শিক্ষকের এমপিও বাতিল করা হয়েছে।
নাটোর লালপুরের বরমহাটি সমবায় উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মিজানুর রহমানের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিবন্ধন সনদ নেই। তিনি জালিয়াতি করে এমপিওভুক্ত হয়েছে। জালিয়াতি করে এমপিওভুক্ত হওয়ায় মো. মিজানুর রহমানের এমপিও বাতিল করা হয়েছে। একই প্রতিষ্ঠানের বাংলার সহকারী শিক্ষক রোকেয়া বেগমের নিবন্ধন নেই। তিনিও জালিয়াতি করে এমপিওভুক্ত হয়েছেন। এ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রোকেয়া বেগমের এমপিও বাতিল করেছে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর।
এ প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার বিষয়ের প্রদর্শক ফিরোজা খাতুনের কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা ও প্রশিক্ষণ না থাকায় তার নিয়োগ বিধিসম্মত নয়। জালিয়াতি করে এমপিওভুক্ত হওয়ায় তার এমপিও বাতিল করেছে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর।
অপরদিকে প্রশিক্ষণ সনদ ছাড়াই নরসিংদীর পলাশ শিল্পাঞ্চল কলেজের কম্পিউটার ডেমোনেস্ট্রেটর মো. জহিরুল হক ভুঞা নিয়োগ দেয়া হয়। এমপিও যথাযথভাবে অনুমোদন না হওয়ার তার এমপিও বাতিল করেছে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর।
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার পীরগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক মো. মোজাফ্ফর হোসেনের নিয়োগ বিধিসম্মত না হওয়ায় তার এমপিও বাতিল করা হয়েছে বলে দৈনিক শিক্ষাকে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
রংপুর পীরগঞ্জ উপজেলার মাদারহাট টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক মো. শরিফুল ইসলাম নিয়োগপত্র, যোগদান পত্র, রেজুলেশন, টেবুলেশন শীট ও সনদ জাল করে নিয়োগ ও এমপিও লাভ করেছেন। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে তদন্ত করা হয়েছিলো। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত ৭ নভেম্বর মো. শরিফুল ইসলাম এমপিও বাতিলের সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়। এ প্রেক্ষিতে মো. শরিফুল ইসলাম এমপিও বাতিল করে তার দ্বারা উত্তোলিত বেতন ভাতার টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়া নির্দেশ দিয়েছে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর। এছাড়া কোষাগারে টাকা ফেরত দিয়ে চালানের কপি অধিদপ্তরে পাঠাতেও বলা হয়েছে মো. শরিফুল ইসলামকে।
এছাড়া নিয়োগের সময়ে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার হাজী কাশেম আলী টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজের কম্পিউটার অপারেশন বিষয়ের প্রভাষক ফৌজিয়া ইয়াসমীনে পদের প্রাপ্যতা ছিলো না। তিনি কম্পিউটার অপারেশনের ২য় পদের প্রভাষক হয়েও উদ্যোক্তা উন্নয়ন বিষয়ে এমপিওভুক্ত হয়েছেন। এ প্রেক্ষিতে ফৌজিয়া ইয়াসমীনের এমপিও বাতিল করেছে অধিদপ্তর।