অবৈধ সুবিধা নেন ইউএনওর শিক্ষক স্ত্রী

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি |

বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকেও সরকারের সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন একজন শিক্ষক। তিনি একজন ইউএনওর স্ত্রী। দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে ম্যানজ করে সুবিধা নিচ্ছেন তিনি। অভিযোগটি জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের খোঁচাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে।

এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা জানান, সহকারী শিক্ষক আনোয়ারা বেগম ২০০০ সালে চাকরিতে যোগদান করেন। ২০০১ সালে তিনি খোঁচাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন। প্রথমদিকে তিনি নিয়মিত ক্লাস করতেন। পরবর্তীতে তার স্বামী প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) হিসেবে যোগদান করার পর থেকে অনিয়মিত হয়ে পরেন। এরপর থেকে তিনি স্বামীর কর্মস্থলেই থাকতেন। মাঝে মধ্যে বিদ্যালয়ে এসে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যেতেন। অভিভাবকরা আরও জানান, এই বিদ্যালয়ে ৩ জন ভাড়াটিয়া শিক্ষক ১২ হাজার টাকা সম্মানী নিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন।

এ সময় হাফিজুর রহমান নামে একজন ভাড়াটিয়া শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তিনি মুখ খুলতে রাজি হননি। ক্লাসের শিক্ষার্থীরা জানায়, আনোয়ারা আপা বহুদিন ধরে স্কুলে আসছেন না। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক হাবিবুল্লাহ এই প্রতিবেদককে শিক্ষকদের হাজিরা খাতা দেখাতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, শিক্ষক আনোয়ারা বেগম দরখাস্ত দিয়ে নৈমিত্তিক ছুটি ভোগ করছেন। তিনি দাবি করেন বিদ্যালয়ে সকল শিক্ষক উপস্থিত রয়েছেন। এরপর তিনি উপবৃত্তির কাজের অজুহাত দেখিয়ে দুপুর আড়াইটার মধ্যে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন।

পরবর্তীতে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে সহকারী শিক্ষক আনোয়ারা বেগম’র সঙ্গে যোগোযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রধান শিক্ষককের কাছে মোবাইলে তিনদিনের নৈমিত্তিক ছুটি নিয়ে রংপুরে অবস্থান করছি। চাকরিতে ইস্তফা দেয়ার বিষয়ে স্বামীর সঙ্গে পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান। আনোয়ারা বেগম’র স্বামী রংপুর বিভাগের একটি উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন বলে জানা গেছে। এই বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা যোতির্ময় চন্দ্র সরকারের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএইচএম মাগফুরুল হাসান আব্বাসী জানান, আমি যতদূর জানি তিনি চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। কাগজপত্র দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান তিনি। এদিকে ভুরুঙ্গামারী উপজেলার একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সরকারি ও বিরোধী দলের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা, সরকারি কর্মকর্তার স্বজন এবং শিক্ষক নেতারা মাসের পর মাস বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে সুযোগ-সুবিধা নিলেও বিভিন্ন চাপ ও প্রভাবের কারণে কোন ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয় না।

সুত্র: দৈনিক সংবাদ। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028669834136963