ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া নিয়ন্ত্রিত অবৈধ ইয়ংমেনস ক্লাবের ক্যাসিনোতে অভিযানের পর ঢাকার আরও তিনটি ক্লাবে অভিযান চালিয়েছে র্যাব। এসব ক্লাব থেকে জুয়ার ২৩ লাখ টাকা উদ্ধার এবং ৩৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ক্লাবগুলো হল- ইয়ংমেনস ক্লাবের পাশের ঢাকা ওয়ান্ডারাস ক্লাব, গুলিস্তানের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র এবং বনানীর আহমদ টাওয়ারের গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ। গতকালের অভিযানে এ তিনটি ক্লাব বন্ধ হলেও অভিযানের ভয়ে এমনিতেই বন্ধ করে রাখা হয়েছে মোহামেডান, আরামবাগ ও ভিক্টোরিয়া ক্লাব।
আজ সকালে সরেজমিন মতিঝিল ক্লাবপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল যে তিনটি (ইয়ংমেন্স ফকিরেরপুল, ওয়ান্ডারার্স ও দিলকুশা) ক্যাসিনোতে অভিযান পরিচালিত হয়েছিল, সেগুলোর আশপাশে উৎসকু জনতার ভিড়। তাদের বেশিরভাগই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্যাসিনো দেখতে চলে এসেছেন। স্থানীয় দোকানদার ও এলাকাবাসীর কাছে অনেকেই নাম, ঠিকানা ও ক্যাসিনো কীভাবে চলে, তারা দেখেছেন কি না ইত্যাদি নানা প্রশ্ন করেন।
তাদের একজন শামসু মিয়া। মিরপুরের পল্লবী থেকে সকালে বাসে চেপে মতিঝিলে ছুটে এসেছেন। তিনি জানান, এককালে হাউজির নেশা ছিল। গত রাতে টিভিতে ক্যাসিনো শুনে দেখতে এলাম, এ জুয়া কীভাবে খেলে। কিন্তু র্যাব কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তারা এখনও বিশ্বাসই করতে পারছেন না যে, ক্ষমতাসীন দলের দোর্দণ্ড প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের মালিকানায় পরিচালিত ক্যাসিনোতে এমন অভিযান চলতে পারে। তারা বলেন, হাউজি, ক্যাসিনো ও মাদকের কবলে পড়ে এ এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার যুবকরা নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকেই অজানা আশঙ্কায় সন্তানদের দেশের বাইরে পাঠাতে বাধ্য হয়েছেন। তবে ক্লাবপাড়ার এ ক্যাসিনোতে কয়দিন সিলগালা থাকবে, তা নিয়ে তারা সন্দিহান বলে জানান।
গতকাল রাজধানীর ফকিরেরপুলে ইয়াংমেন্স ক্লাবে র্যাবের অভিযানে আটক হওয়া ১৪২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়। র্যাবের এক কর্মকর্তা জানান, সাজাপ্রাপ্তদের নাম-ঠিকানাসহ তথ্য কারাগারে পাঠানোর আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পন্ন করতে প্রায় ভোর হয়ে যায়। তখন থেকেই পর্যায়ক্রমে সাজাপ্রাপ্ত ১৪২ জনকে কারাগারে পাঠানো শুরু হয়। গত রাতে ক্যাসিনোতে গ্রেফতার হওয়া ১৪২ জনের মধ্যে ইয়াংমেন্স ক্লাবের ছয়জন কর্মচারীসহ ৩১ জনকে এক বছর এবং বাকিদের ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম।