চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের রানিহাটী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গত ১১ জুন বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটি তাকে বরখাস্ত করে বলে জানা গেছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিসহ কর্মরত অন্য শিক্ষকরা জানান, স্কুলের ভবনের দোকানঘর অবৈধভাবে দখল করে ভাড়ার ৪ লাখ টাকা তহবিলের জমা না দেয়া, সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে বিলম্বের লক্ষ্যে ১ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন, দোকানঘর মেরামতের নামে ২ লাখ টাকা ও বিদ্যুৎ বিলের ১ লাখ টাকা আত্মসাৎসহ মোট ১৮টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
অন্যদিকে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, শিক্ষকদের বেতন-ভাতা আটকে রাখাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এসব কারণে কিছুদিন পূর্বে ম্যানেজিং কমিটি ও বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক তার বিপক্ষে অবস্থান নেন। পরে সভা করে ম্যানেজিং কমিটি জিজ্ঞাসা করলে সঠিক উত্তর দিতে পারেননি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এরপর দুই দফায় প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলে তিনি নোটিশ গ্রহণ না করে প্রেরক বরাবর ফেরত দেন।
এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান জানান, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন পূর্বেই অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যায়। পরবর্তীকালে ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকেরা সভা করে বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষকদের চাকরির শর্ত বিধিমালা ১৯৭৯ এর ২ (এ) ও ১৩ (১) ধারা মতে প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তের অনুলিপি রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর প্রেরণ করা হয়।
পাশাপাশি বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষকদের চাকুরির শর্ত বিধিমালা ১৯৮৯ এর ১৪ (২) ধারা অনুসারে তদন্ত কমিটি গঠন হয়। অভিযোগগুলোর সত্যতা মিললে প্রধান শিক্ষকককে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তবে প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বরখাস্তের বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর মস্তাফিজুর রহমান জানান, সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সমন্বয়ে মিটিং হয়েছে। আশা করি সমস্যার সমাধান হবে।