নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের নামে সরকার বিরোধী প্রচারণার ভেন্যু হিসেবে ব্যবহৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য সংগ্রহ করছে মন্ত্রণালয়। জানা যায়, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্টের যৌথ উদ্যোগে সারাদেশের ৩০টি নির্বাচনী এলাকার ২৭৫টি সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিতর্কিত ও সরকার বিরোধী কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরের পূর্বানুমতি ছাড়াই প্রতিষ্ঠান প্রধানরা এই অলিম্পিয়াডের জন্য এনজিও দুটিকে ভেন্যু ব্যবহার করতে দেন। এতে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়। স্থানীয় পর্যায়ে অলিম্পিয়াড শুরু হয় ২৬ সেপ্টেম্বর শেষ হয় ৩১ অক্টোবর। জাতীয় পর্যায়ে ১০ নভেম্বর রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
একটি সংস্থার দেয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সোমবার (১২ নভেম্বর) শিক্ষা অধিদপ্তর দেশের সব জেলা, উপজেলা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠানের তথ্য চেয়ে চিঠি দেয়।
অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম টুকু স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, সুজন ও দি হাঙ্গার প্রজেক্টের যৌথভাবে আয়োজিত সরকার বিরোধী নির্বাচনী অলিম্পিয়াডের ভেন্যু হিসেবে কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবহৃত হয়েছে তার তালিকা চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেন্যু হিসেবে ব্যবহারের পূর্বে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল কিনা তা ৩ দিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
ভেন্যু হিসেবে ব্যবহৃত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে মানিকগঞ্জে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ, রাজশাহীর চারঘাট এম এ হাদি কলেজ, নওগাঁ সরকারি কলেজ, মুন্সিগঞ্জের কে বি ডিগ্রী কলেজে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব অনার্স কলেজ, কক্সবাজার মডেল হাই স্কুল, নেত্রকোনার দুর্গাপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ, হবিগঞ্জের বৃন্দাবন সরকারি কলেজ, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ, ভোলা সরকারি শেখ ফজিলাতুন্নেছা মহিলা কলেজ, বরিশালের বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাটি সরকারি কলেজ, মেহেরপুর গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজ, যশোরের নওয়াপাড়া সরকারি মহাবিদ্যালয়, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার লোকমান ফকির মহিলা ডিগ্রী কলেজ, কুড়িগ্রাম উলিপুরের শতদল কিন্ডারগার্টেন স্কুলে নির্বাচনী অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সরকারি কলেজ ও স্কুলের অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষক পদে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা রয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাকে জানান, অধিদপ্তর থেকে তালিকা পাওয়ার পর সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিরুদ্ধে বিভা্গীয় মামলা ও এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের এমপিও বাতিলের উদ্যোগ নেয়া হবে।