বাংলাদেশের কথাসাহিত্যে আধুনিকতার পথিকৃৎ শওকত ওসমানের ১০৪তম জন্মদিন আজ। ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার সবলসিংহপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবনেই পিতৃদত্ত নাম শেখ আজিজুর রহমান বাদ দিয়ে সাহিত্যিক হিসেবে শওকত ওসমান নামে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে। আজীবন অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তচিন্তার ধারক ছিলেন তিনি।
তীক্ষষ্ট সমাজ সচেতনতা আর ব্যঙ্গ-বিদ্রুপে তার গল্প-উপন্যাস প্রখর জীবনবাদী। তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- 'বনি আদম', 'জননী', 'ক্রীতদাসের হাসি', 'চৌরসন্ধি', 'জাহান্নাম হইতে বিদায়', 'দুই সৈনিক'। গল্পগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- 'পিঁজরাপোল সাবেকি কাহিনী', 'জন্ম যদি তব বঙ্গে', 'মনিব ও তাহার কুকুর'। তার লেখা নাটকের মধ্যে রয়েছে- আমলার মামলা, তস্কর ও লস্কর, বাগদাদের কবি, পূর্ণ স্বাধীনতা চূর্ণ স্বাধীনতা। তার আত্মজীবনী
রাহনামা, স্মৃতিকথা দুই খে মুজিবনগর ও উত্তর পর্ব মুজিবনগর ইতিহাসের বহু ঘটনার দলিল।
সাহিত্যকর্মে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, নাসিরুদ্দিন স্বর্ণপদক, ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার, টেনাশিস পুরস্কার, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার অর্জন করেছেন। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাে র পর প্রায় পাঁচ বছর কলকাতায় স্বেচ্ছানির্বাসনে ছিলেন শওকত ওসমান। ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ মার্চ সেরিব্রাল অ্যাটাকে আক্রান্ত হন। একই বছরের ১৪ মে সকালে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন তিনি।