আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকে কৃষি ও কৃষিতে প্রাধান্যে থাকা আট সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একই দিনে একই প্রশ্নপত্রে সমন্বিতভাবে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে মোট ৪২ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাদবাকিরা এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। জানা যায়, ভিন্ন ভিন্ন ভর্তি পরীক্ষা হলে প্রচুর টাকা আয় হয় এবং এই টাকার অধিকাংশই শিক্ষকদের মধ্যে ভাগাভাগি হয়। এই কারণে, লাখ লাখ ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হলেও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নিতে রাজী নন বড় বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যরা।
জানতে চাইলে সাবেক শিক্ষাসচিব মো. নজরুল ইসলাম খান দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, বর্তমান ভর্তি পদ্ধতিতে শিক্ষকদের বড় অংশের আর্থিক সংশ্লেষ আছে। ফলে তারা এই পদ্ধতিতেই আগ্রহী। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দূর্ভোগ কমাতে অবশ্যই সমন্বতি ও গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া উচিত। তবে, এই গুচ্ছ হওয়া উচিত বিষয়ভিত্তিক।
এখন এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা চলছে। এর ফল প্রকাশের পরপর শুরু হবে উচ্চশিক্ষার ভর্তির যুদ্ধ। এক যুগ ধরে আলোচনার ধারাবাহিকতায় এ বছর থেকে কৃষি বিষয়ক আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা হবে সমন্বিতভাবে। এগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, সব বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু এখনো রাজি হয়নি, তাই তাঁরা আটটি বিশ্ববিদ্যালয় আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকেই গুচ্ছ ভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
সরকারের লক্ষ্য হলো, পর্যায়ক্রমে একই ধারার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একেকটি গুচ্ছে এনে একটি ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো। যেমন এরপর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একেকটি গুচ্ছ করে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, ইউজিসির সুপারিশ পেলেই মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকদের অর্থের অপচয় ও দুর্ভোগ কমাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গুচ্ছভিত্তিক ভর্তির কোনো বিকল্প নেই। ভর্তি পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাড়তি আয়ের উপায় হয়ে উঠেছে। এ জন্যই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছভিত্তিক পদ্ধতি চায়নি। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে এটা করতেই হবে।