আত্মহত্যায় প্ররোচনার শাস্তি: আইনে যা আছে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ভিকারুননিসা নূন স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যা নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় চলছে। সরকারি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন মতে, স্কুল কর্তৃপক্ষের খারাপ ব্যবহার এবং তার বাবা-মাকে অপমানের কারণেই অরিত্রী আত্মহত্যা করেছেন। তবে, এই আত্মহত্যার প্ররোচনার জন্য কি স্কুল কর্তৃপক্ষ দায়ী হবেন? আর যদি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে কেমন শাস্তির মুখোমুখি হবেন? বাংলাদেশের আইন এ বিষয়ে কী বলছে?


আত্মহত্যায় প্ররোচনা আসলে কী?

বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে আত্মহত্যায় প্ররোচনার সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা পাওয়া যায় না। তবে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) -এর ৯ক ধারায় নারীর আত্মহত্যায় প্ররোচনার শাস্তির বিধান উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কোনও নারীর সম্মতি ছাড়া বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনও ব্যক্তির ইচ্ছাকৃত কোনও কার্য দ্বারা সম্ভ্রমহানি হওয়ার প্রত্যক্ষ কারণে আত্মহত্যা করলে, ওই নারীকে অনুরূপ কার্য দ্বারা আত্মহত্যা করতে প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে বলা হবে।

শাস্তির ব্যাপারে আইন কী বলে?

বাংলাদেশে প্রচলিত আইনে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়ার অপরাধে শাস্তির বিধান রয়েছে। তবে এমন অভিযোগ এনে দায়ের করা মামলায় শাস্তিদানের ঘটনা বিরল। আত্মহত্যার প্ররোচনায় বাংলাদেশ দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৩০৬ ধারা অনুযায়ী, ব্যক্তির আত্মহত্যায় প্ররোচণায় সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানা। তবে আত্মহত্যার চেষ্টা করেও যদি ঐ ব্যক্তি মারা না যান তবে প্ররোচনা দানকারী ঐ ব্যক্তির ১ বছরের জেল হতে পারে।

এবিষয়ে আইনজীবী শফিক আহমেদ দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, আত্মহত্যায় প্ররোচনর ক্ষেত্রে শাস্তি হবে তাদের যারা প্ররোচনায় দিয়েছিলেন। যতজনই প্ররোচনা দিয়ে থাকেন না কেন প্ররোচনাদানকারী সবাইকেই আইনের আওতায় আসতে হবে। এক্ষেত্রে অভিযুক্ত সবাইকেই তাদের ভূমিকা বা অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রদান করা যেতে পারে।

কোন শিক্ষার্থীকে যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তিরস্কার করা হয় বা মানসিকভাবে হেয় করা হয় অথবা অপমান করা হয়ে থাকে তবে সে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার জন্যও দায়ী হবেন ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ। এমন প্রশ্নের জবাবে এই আইনজীবী বলেন, বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেয়া সার্কুলারে পরিস্কারভাবে উল্লেখ আছে যে কোন অবস্থাতেই শিক্ষার্থীদের মানসিক কিংবা শারীরিকভাবে নির্যাতন করা যাবে না। ঐ মর্মে উচ্চ আদালতের রায়ও রয়েছে।

শফিক আহমদ আরও বলেন, এছাড়াও বাংলাদেশে রয়েছে শিশু আইন। আঠারো বছরের নিচে যে আইনে সকলেই শিশু বলে বিবেচিত। ২০১৩ সালের আইন অনুযায়ী এই বয়সের যেকোনো ব্যক্তি অপরাধী প্রমাণিত হলেও তার প্রতি সদয় আচরণ করতে হবে। এসময় কোন অবস্থাতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কর্পোরাল পানিশমেন্ট দেয়া যাবে না।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027730464935303