আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ৬৩ জন নিহত ও ১৮০ জন আহত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বিয়ের অনুষ্ঠান স্থলে একজন আত্মঘাতী হামলাকারী নিজের শরীরে থাকা বিস্ফোরণ দিয়ে উড়িয়ে দেয়। শহরের পশ্চিমে শিয়া অধ্যুষিত একটি এলাকায় এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে তালেবান এ হামলার দায় অস্বীকার করেছে এবং অন্য আর কেউ এ ঘটনার দায় স্বীকার করেনি।
যদিও কথিত ইসলামিক স্টেট গ্রুপ ও তালেবানসহ সুন্নি মুসলিম জঙ্গিরা বিভিন্ন সময়ে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে সংখ্যালঘু শিয়া সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে অতীতে বিভিন্ন সময় হামলা চালিয়েছিল। আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হতাহতের খবর নিশ্চিত করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে বিয়ের অনুষ্ঠান স্থলে মৃতদেহগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আফগানিস্তানে বিয়েতে অনেক অতিথি থাকে ও তারা একটি বড় হলঘরে সমবেত হয় যেখানে পুরুষদের থেকে নারী ও শিশুরা আলাদা অবস্থানে থাকে।
বিয়েতে আসা একজন অতিথি মোহাম্মদ ফারহাদ বলছেন পুরুষরা যেখানে অবস্থান করছিলেন সেখানে যখন প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় তখন তিনি ছিলেন নারী ও শিশুদের অবস্থানের কাছে। "সবাই চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বাইরে দৌঁড়ে বেরিয়ে যায়,"তিনি বলছিলেন বার্তা সংস্থা এএফপিকে।
"প্রায় বিশ মিনিট ধরে পুরো হলরুমটি ছিলো ধোয়ায় ভর্তি। পুরুষদের প্রায় সবাই হয় নিহত কিংবা আহত। ঘটনার দু ঘণ্টা পরেও সেখান থেকে মৃতদেহ নেয়া হচ্ছে"।
বিয়ের অনুষ্ঠানে কাজ করা একজন ওয়েটার সৈয়দ আগা শাহ। তিনি বলেন বিস্ফোরণের শব্দ শুনে সবাই দৌড় শুরু করে। "আমাদের বেশ কয়েকজন ওয়েটার নিহত বা আহত হয়েছে"।
তালেবানদের একজন মুখপাত্র এক হামলার 'তীব্র নিন্দা' জানিয়েছে।
মিডিয়ায় পাঠানো এক বার্তায় জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, নারী ও শিশুদের টার্গেট করে এ ধরণের নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের কোনো যৌক্তিকতা নেই।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ এ হামলার মাত্র দশদিন আগে কাবুল পুলিশ স্টেশনের কাছে বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছিলো। সেই হামলার দায় স্বীকার করেছিলো তালিবান।
শুক্রবার তালেবান নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার একজন ভাই পাকিস্তানের কোয়েটার কাছে একটি মসজিদে পেতে রাখা বোমায় নিহত হন। সেই হামলার দায় অবশ্য কেউ স্বীকার করেনি।
দেশটিতে এখন চরম উত্তেজনা বিরাজ করছেন যদিও তালেবান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তির খুব কাছে বলে বলা হচ্ছে। কাতারের দোহায় দু পক্ষের প্রতিনিধিরা শান্তি আলোচনায় অংশ নিচ্ছে।