আবরার হত্যা: মামলার দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ নিয়ে ক্ষোভ আইনজীবীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যামামলায় প্রতিদিন দীর্ঘ সময় নিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ চলায় ক্ষোভ জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

বুধবার ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে শুনানি চলার সময়ই ক্ষোভের কথা জানান আসামি পক্ষের আইনজীবীরা।

তবে বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান আলোচিত এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দৈনিক কার্যক্রম সংক্ষিপ্ত না করার কথা জানিয়ে দেন বলে সংশ্লিষ্ট আদালতের কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

গত ৫ অক্টোবর আবরার হত্যামামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর পর প্রতি দিনই শুনানি সন্ধ্যার পর পর্যন্ত গড়াচ্ছে।

মামলাটিতে ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে বুধবার সাক্ষ্য দেন তিনজন। এনিয়ে মোট ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হল।

বুয়েটের প্রহরীদের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মতিউর রহমান, পুলিশ সদস্য গোলাম মোস্তফা ও রবিউল এদিন সাক্ষ্য দেন।

মতিউর এর আগে সাক্ষ্য দিলেও তাকে পুনরায় তলব করা হয়। তিনি বিচারকের কাছে দুই গাছি নীল ও সাদা রংয়ের নাইলন রশি, একটি হুয়াওয়ে এবং সিম্ফনি মোবাইল সেট, টিস্যু, কাঁচি, গজ, ক্লিপ, হাতুড়ি আদালতে আলামত হিসাবে জমা দেন।

এ রশি দিয়ে আবরারকে বাঁধা হয়েছিল বলে জানানো হয়। মোবাইল সেটটিও তার ছিল। এদিন মোস্তফার জেরা শেষ হলেও রবিউলের জেরা শেষ হয়নি। বিচারক বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।

সাক্ষ্যগ্রহণ বিকাল ৫টার পরও চলায় আসামি পক্ষের আইনজীবীরা আদালতেই ক্ষোভ জানান।

আইনজীবী আমিনুল গনী টিটো, মাহবুব আহমেদ, মুনজুর আলম, আজিজুর রহমান দুলু, ফারুক আহাম্মেদ উষ্মা প্রকাশ করেন।

তারা বলেন, বিকালের পরও সাক্ষ্যগ্রহণ চলায় তারা ক্লান্ত হযে পড়েন। আর সন্ধ্যার সময় সাক্ষ্য নেওয়া বিচারিক আচারের মধ্যে পড়ে না।

আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, বিচারক দেরিতে এজলাসে ওঠেন বলে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হতে সময় বেশি লেগে যাচ্ছে।

আইনজীবী আমিনুল গনী টিটো বলেন, “এ মামলায় অনেক আসামি আর অনেক আইনজীবী এজলাসে হাজির থাকেন। গরম, বিচারের ভৌত অবকাঠামোর অভাব, প্রয়োজনের তুলনায় ছোট এজলাস ইত্যাদির কারণে আমরা খুব ক্লান্ত হয়ে পড়ি। আমাদের পরিচালিত অন্য মামলার শুনানিতে সময় দিতে ব্যর্থ হই। বিচারক আমাদের এ বিষয়গুলো বিবেচনা করছেন না।”

শুনানির এক পর্যায়ে এই আইনজীবীরা একজন সাক্ষীর সাক্ষ্য অসমাপ্ত রেখে এজলাস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন।

তবে পরে আইনজীবীরা জানতে পারেন যে সাক্ষীকে এ সব আসামিদের পক্ষ থেকে জেরা করায় অস্বীকৃতি (ডিক্লাইন) জানানো হয়েছে বলে বিচারক নথিপত্রে উল্লেখ করেছেন।

ট্রাইবুনালের পেশকার সামশুদ্দিন জুম্মন বলেন, “বিচারক বলেছেন, ‘আমি যতক্ষণ পর্যন্ত সাক্ষ্য শেষ না হয ততক্ষণ সাক্ষ্য নেওযা চালিয়ে যাব, এটাতে যতই সময় লাগুক না কেন’।”

গত বছরের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের একটি কক্ষে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী পিটিয়ে হত্যা করে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে।

আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ কুষ্টিয়া থেকে এসে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেন।

এক মাস পর ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান। গত ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়।

আসামিদের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জন এবং এজাহারবহির্ভূত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তিন আসামি পলাতক রয়েছেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ - dainik shiksha অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র - dainik shiksha ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে - dainik shiksha ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! - dainik shiksha ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল - dainik shiksha জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0061900615692139