বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস রিও গ্র্যান্ড ভ্যালিতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। তিন ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে আবরার হত্যায় নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে ছিল আবরার হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড।
এ সময় শিক্ষার্থীরা আবরার হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
শফি আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘কত পৈশাচিক হলে এভাবে দফায় দফায় মারধর করে একজন মানুষকে মেরে ফেলা যায়! আমরা সবাই দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের ভাই আবরারের খুনিদের বিচার চাই।’
সৌমিক সাকিব নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মেধা মানুষের পরিচয় নয়, বরং মানুষের সবচেয়ে বড় পরিচয় তার পরিবার। পারিবারিক শিক্ষার অভাবেই মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটে। আবরারের হত্যাকাণ্ডের কারণ যাই হোক, আসামিদের পারিবারিক শিক্ষার অভাব ছিল বলে আমরা মনে করি। আমরা এ হত্যার বিচার চাই।’
প্রশান্ত বিশ্বাস নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘শুধু রাজনৈতিক কারণে একজন মেধাবী ছাত্র এভাবে ঝরে পড়তে পারে না। দ্রুততম সময়ে আমরা এর বিচার কার্যকর করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় পরের দিন ৭ অক্টোবর আবরারের বাবা মো. বরকত উল্লাহ চকবাজার থানায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। সে রাতেই বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১১ জনকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আজ পর্যন্ত মোট ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে মোট চারজন জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন মামলার ৫ নম্বর আসামি বুয়েটের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, ৭ নম্বর আসামি ও বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, ৩ নম্বর আসামি ও বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার ও এজাহারভুক্ত ৯ নম্বর আসামি মুজাহিদুর রহমান।