প্রকাশনার সব শাখা নিয়ে আমরা কাজ করি। শিক্ষার্থীদের জন্য একাডেমিক বই অনিবার্য। সৃজনশীল বই একাডেমিক বইয়ের পাশাপাশি পড়ছে। আমাদের একাডেমিক বইয়ের প্রচারণা একসময় বেশি থাকায় অনেকে মনে করতেন আমরা এ বইগুলো বেশি করি। পরে গবেষণার মাধ্যমে সৃজনশীল বইকে মানুষের খুব কাছে পৌঁছে দিয়েছি।
এ ক্ষেত্রে তরুণদের বই খুব বেশি সহায়ক হয়েছে। বড় বড় প্রকাশনা যখন প্রবীণ আর জনপ্রিয় লেখকের বই প্রকাশে ব্যস্ত, তখন আমরা তরুণদের বই পাঠকের কাছে পৌঁছে দিতে ভূমিকা রেখেছি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত লেখকের চেয়ে নবীন এবং তরুণ লেখকের সংখ্যা বেশি। ৮৫ শতাংশ আমাদের তরুণ লেখক। তারা অনেক সম্ভাবনাময়।
তাদের সঙ্গে পাঠকের একটি নিবিড় সম্পর্ক আমরাই করে দিয়েছি। এই কাজটি করতে আমাদেরও যথেষ্ট সময় লেগেছে। এর পরই পাঞ্জেরী সৃজনশীল অঙ্গনে একটি বড় জায়গা দখল করতে পেরেছে। শুধু লেখকই নন, প্রচ্ছদের ব্যাপারেও আমরা যথেষ্ট মান যাচাই করি। বই প্রকাশের পর প্রথমেই পাঠকের চোখে ধরা পড়ে প্রচ্ছদ।
এটা দেখেই পাঠক বুঝতে পারেন এখানে কী ধরনের লেখনী রয়েছে। এই কাজটি আমরা পুরোপুরি প্রচ্ছদ শিল্পীর ওপর ছেড়ে দিই না। তার সঙ্গে পরামর্শ করে নতুন কিছু করার চেষ্টা করি। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রকাশককে বিচক্ষণ হতে হবে। কারা ভালো লিখছে এটা প্রকাশককে জানতে হবে। সে সঙ্গে একটা পাণ্ডুলিপিকে মানসম্পন্ন বইয়ে রূপান্তর করার দায়িত্বও তার।
এটাই শেষ নয়। আরও একটি বড় কাজ সঠিক মূল্য সংযোজন। এ ক্ষেত্রে পাঠকের কথা মাথায় রাখতে হবে। যতটা পারা যায় কম মূল্য রাখতে হবে। যেন পাঠক বেশি বই কিনতে পারেন। আমরা অনেক সময় বেশি দামি বইয়ের কম দাম এডিশনও করি। এ ক্ষেত্রে বাইন্ডিং বা পেপারের কিছুটা পরিবর্তন আনতে হয়। এতে বইয়ের প্রতি পাঠকের সম্পৃক্ততা বাড়ে। তৈরি হয় নতুন পাঠক।
বই প্রকাশিত হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আমরা সারাদেশে পৌঁছে দিতে পারি। এ ক্ষেত্রে আমাদের জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে বড় একটি ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেল রয়েছে। তারা সরার কাছে খুব কম সময়ে বই পৌঁছে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সেই সঙ্গে প্রচারণা জরুরি। এর জন্য খুব বেশি খরচ লাগে না। প্রয়োজন তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার। আমাদের সব বই সমানভাবে প্রচার করে থাকি। এ কাজগুলো সঠিকভাবে করার ফলে নবীন এবং নতুন লেখকদেরও পাঠকের খুব কাছে নিয়ে যেতে পারি।
শিশুতোষ বইয়ের দাম বেশি, এ নিয়ে বাজারে বেশ গুঞ্জন রয়েছে। তবে তুলনামূলকভাবে আমাদের শিশুতোষ বইয়ের দাম অনেক কম। আমাদের প্রকাশনী থেকে ১২৫টি বই আসছে। আমরা সারা বছর বই প্রকাশ করি। আর জানুয়ারির ১৫ তারিখের পর কোনো নতুন পাণ্ডুলিপি নিয়ে কাজ করি না। মেলার প্রথম দিনই সব বই চলে আসে। বই খুঁজে নিতে পাঠক অনেক সময় পান।
প্রকাশক, পাঞ্জেরী