আরও দুই বোনাস চায় এনটিআরসিএ কর্মকর্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনের সমপরিমাণ বছরে বাড়তি দুটি বোনাসের দাবি জানিয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এ দাবিতে গত ১৪ জানুয়ারি এর যৌক্তিকতা তুলে ধরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে এনটিআরসিএ।

এ বোনাস পেলে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাজের গতি আরও বাড়বে বলে জানান প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, বাংলাদেশ কর্ম কমিশন (পিএসসি) ও মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় রেখে প্রতি বছর বেতন সমমান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাড়তি দুটি বোনাসের জন্য আবেদন করেছে এনটিআরসিএ। 

আবেদনে বলা হয়েছে, এনটিআরসিএ বিধি মোতাবেক শিক্ষক হিসেবে নিবন্ধন ও প্রত্যয়নের জন্য প্রার্থীদের যোগ্যতা নিরূপণ ও প্রত্যয়নপত্র প্রদানের উদ্দেশে কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর অন্তত একবার পরীক্ষা গ্রহণ করে থাকে। ২০১৬ সাল থেকে বেসরকরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি লেভেলে যোগ্যতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করে আসছে। অথচ এখানে মাত্র ২৩ জন কর্মকর্তা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে।

আবেদনে আরও বলা হয়েছে, পিএসসি ও শিক্ষা বোর্ডগুলোতে পরীক্ষা পরিচালনা কার্যক্রমের মতো এনটিআরসিএ করে আসলেও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সমমান অতিরিক্ত কাজের পারিশ্রমিক হিসেবে মূল বেতন সমপরিমাণ অর্থবাবদ অতিরিক্ত বোনাস দেয়া হচ্ছে না। এনটিআরসিএর কর্মপরিধি ক্রমান্বয়ে বাড়লেও এর জন্য জনবল ও সুযোগ সুবিধা আগের মতোই দেয়া হচ্ছে। স্বল্প সংখ্যক জনবল থাকায় সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ অফিস সময়ের পরও বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। বিশেষ করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্ষেত্র বিশেষে গোপনীয় কাগজপত্রের প্যাকেট ও ট্রাঙ্ক ওঠা-নামাসহ অন্যান্য শারীরিক পরিশ্রম করতে হচ্ছে। অথচ এসব অতিরিক্ত কাজের জন্য কোনো প্রণোদনা না থাকায় ২০১৮ সালে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।

আবেদনে বলা হয়েছে, এনটিআরসিএর চেয়ে অধিক জনবল থাকা শিক্ষা বোর্ডগুলোতে প্রতিটি পরীক্ষার জন্য আলাদা বোনাস হিসেবে বছরে বাড়তি পাঁচ থেকে ছয়টি বেতনের সমপরিমাণ বোনাস দেয়া হয়। সেখানে একটি নিবন্ধন পরীক্ষায় ৯ লাখের বেশি এবং ৮০-৮১টি বিষয়ের ওপর পরীক্ষা আয়োজন করা হয়। অথচ বাড়তি কাজের পারিশ্রমিক না পাওয়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের প্রতি স্পৃহা কমে যাচ্ছে। এ কারণে তারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে।

জানতে চাইলে এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান এসএম আশফাক হুসেন বলেন, ‘গত দুই বছর শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা ও শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত ছিল। বর্তমানে একটি জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এটি কাটিয়ে তুলতে আমরা ক্রাশ পদ্ধতি হাতে নিয়েছি। এ জন্য ২৩ কর্মকর্তা এবং নিয়মিত-অনিয়মিত ৬০ কর্মচারী নিয়ে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি। সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও অফিসে উপস্থিত হয়ে তারা কাজ করছে। অতিরিক্ত কাজের জন্য বাড়তি দুটি বোনাসের আবেদন করা হয়েছে।’

চেয়ারম্যান বলেন, ‘এনটিআরসিএ একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হলেও নিজ আয় দিয়ে প্রতিষ্ঠান চলতে হচ্ছে। আমরা নানা জটিল সময় পার করছি। দিনরাত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করে গেলেও তাদের বাড়তি কাজের পরিশ্রম দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বছরে আয়োজিত প্রতিটি পরীক্ষা আয়োজনের জন্য বাড়তি দুটি বোনাসের আবেদন করা হয়েছে। এটি দেয়া হলে এ প্রতিষ্ঠানের কাজের গতি আরও বাড়বে।’

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দিতে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে এনটিআরসিএ। বর্তমানে ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। আগামী ১৫ এপ্রিল প্রিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

কর্মকর্তারা জানান, ৪০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রমের সঙ্গে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ দিতে সারাদেশ থেকে শূন্য পদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। সঠিক তালিকা পেতে সারাদেশের জেলা ও উপজেলা কর্মকর্তাদের সভা সেমিনার করে প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। এ তালিকা পেলে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন করে আরও প্রায় ৬০ হাজার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ বলেন, এনটিআরসিএর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাড়তি কাজের জন্য বেতন সমমান বার্ষিক দুটি বোনাস দাবি করে আবেদন পেয়েছি আমরা। বিষয়টি নিয়ে আলোচন ও পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে।

তিনি বলেন, যদি এ প্রতিষ্ঠানে বাড়তি বোনাস দেয়াটা যুক্তিসঙ্গত হয়, তবে আমরা তা বিবেচনা করে ব্যবস্থা দেব। দ্রুতই এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে। অনুমোদন হলে বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0049090385437012