আরও ৩০ দিন পুরোপুরি লকডাউন ঘোষণা করা হোক

মো. আবুল বাশার হাওলাদার |

বিশ্বব্যাপী মহাদুর্যোগ করোনা ভাইরাসে কেঁপে উঠেছে বাংলাদেশ। বাড়ছে সংক্রমণের হার। প্রতিদিন করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অফিস-আদালত বন্ধ থাকবে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। অঘোষিত লকডাউন চলছে। অধিকাংশ মানুষ ঘরে বন্দি আছেন। তারপরও বেশকিছু মানুষ ঘরের বাইরে আছেন নানা পেশায় নিয়োজিত।

মানুষ এখন শঙ্কিত, কখন এই প্রাণঘাতী ভাইরাস হানা দেয়  শরীরে। যেখানে ইতালি, স্পেনের মতো দেশ সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়ে আকাশের উপর ভরসা করে বসে আছেন, আমরা এখন কী করব। অবশ্যই আমরা আল্লাহর রহমত কামনা করছি এবং সকল স্বাস্থ্যবিধি অক্ষরে অক্ষরে পালন করব।

লক্ষ করা যাচ্ছে, এখনো অনেক মানুষ শুধু শুধু রাস্তায় ঘুরে বেড়ান, চায়ের দোকানে আড্ডায় মেতে থাকেন, মসজিদে নামাজ পড়ে বাইরে এসে জটলা পাকান। বিনা কারণে বাইরে এসে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। ত্রাণ নিতে এসে গণজমায়েতের সৃষ্টি করে। আবার ত্রাণ পাওয়ার আশায় হন্যে হয়ে ঘোরাঘুরি করে জনসমাগমের সৃষ্টি করছেন। গণপরিবহন না থাকায় পণ্যবাহী ট্রাক বা অন্যান্য যানবাহনে যাতায়াত করছেন এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন না। এভাবে চলতে থাকলে করোনা পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়ে চরম আকার ধারণ করতে পারে। তখন আর করার কিছু থাকবে না।

এই মুহূর্তে আমার প্রস্তাবনা তুলে ধরছি

  • আজ থেকে ৩০ দিন ১০০ শতাংশ লকডাউন ঘোষণা করা হোক। হাসপাতাল ছাড়া সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
  • খাদসামগ্রী, ওষুধপত্রসহ সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বাসায় পৌঁছে দিতে হবে।
  • প্রত্যেক পাড়া, মহল্লা, রোড, অলিগলিতে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী মোতায়েন করতে হবে জনগণের তাৎক্ষণিক সেবা দেয়া ও সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ- মনিটরিং করার জন্য।
  • সকল যোগাযোগ ফোন ও অনলাইনভিত্তিক হবে। এজন্য বিশোর্ধ্ব সব মানুষের মোবাইলে বিশেষ অঙ্কের রিচার্জ বিনা মূল্যে পৌঁছে দিতে হবে।
  • শাকসবজি, কাঁচামাল, ফলসহ অন্যান্য নিত্যপণ্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় কৃষকের বাড়ি থেকে সংগ্রহ করে গৃহবন্দি মানুষকে দিতে হবে।
  • অনলাইন সেবা আরও বৃদ্ধি  করতে হবে। 
  • বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হটলাইন সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে এবং এগুলো ২৪ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন সচল রাখতে হবে।
  • অন্তত প্রতি জেলায় একটি করে অস্থায়ী  হাসপাতাল স্থাপন করতে হবে যেখানে শুধু করোনা আক্রান্ত রোগীরাই থাকবে। প্রতি উপজেলায় করোনা শনাক্ত কিট পর্যাপ্ত থাকতে হবে।
  • আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সাংবাদিক, স্বেচ্ছাসেবী, সেবাদানকারী ডাক্তার-নার্সদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং তাদের স্বাস্থ্য-সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
  • শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার জন্য চলমান টিভি পাঠদানের পরিধি ও সময় বাড়াতে হবে। তাছাড়া অনলাইনভিত্তিক পাঠদান বাড়াতে হবে।
  • সমাজের ধনাঢ্য ব্যক্তিরা পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা দেবেন।
  • সোশ্যাল মিডিয়াসহ সকল মিডিয়ায় সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান ও নির্দেশনা বৃদ্ধি করতে হবে।
  • করোনা আক্রান্ত অঞ্চল বিশেষ নজরদারিতে রাখতে হবে।
  • মানুষের চলাচলে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকতে হবে।
  • হ্যান্ড স্যানিটাইজার, স্যাভলন-ডেটল, মাস্কসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকতে হবে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা শঙ্কিত ও আতঙ্কিত হয়তো বা আরও কঠিন অবস্থা মোকাবেলা করতে হবে। এমতাবস্থায় নতুন করে ভাবতে হবে কীভাবে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। সকল মানুষ যেভাবেই হোক ঘরে রাখতে হবে। এখনই উপযুক্ত সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার। আমরা সবাই এই মহাসংকটে দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণির মানুষ এগিয়ে আসি এবং সচেতন হই।

লেখক : মো. আবুল বাশার হাওলাদার, সভাপতি, বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়ন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025670528411865