অমর্ত্য সেনের পর অর্থনীতিতে এ বছর নোবেল পেলেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় জন্মগ্রহণকারী এই অর্থনীতিবিদের সঙ্গে পুরস্কারটি পেয়েছেন তার ফরাসি বংশোদ্ভূত মার্কিন স্ত্রী এসথের ডুফলো এবং যুক্তরাষ্ট্রের মাইকেল কার্মার।
এবার নোবেল পুরস্কারের ৯০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার যৌথভাবে ভাগ করে নেবেন এই তিনজন। আগামী ১০ ডিসেম্বর সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হবে।
দ্যা রয়েল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস বৈশ্বিক দারিদ্র্য বিমোচনে তাদের পরীক্ষা নিরীক্ষার দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেছে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এই তিনজন অর্থনীতিবিদের গবেষণা দারিদ্র্যের সাথে লড়াইয়ের সক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করেছে। মাত্র দু'দশকে তাদের নতুন নিরীক্ষাভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিকসে রূপ নিয়েছে, যা এখন গবেষণার নতুন ক্ষেত্র হিসেবে বিকশিত হচ্ছে।
অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি পড়াশোনা করেছেন ভারতের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি পিএইচডি করেছেন ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে। এখন কাজ করছেন ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, যা এমআইটি নামে বিশ্বে বহুলভাবে পরিচিত। সেখানে তিনি ফোর্ড ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনাল প্রফেসর হিসেবে অর্থনীতি পড়াচ্ছেন। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি এসথার ডুফলো ও সেন্ধিল মুল্লাইনাথানকে সাথে নিয়ে আব্দুল লতিফ জামিল পোভার্টি অ্যাকশন ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেন।
৫৮ বছর বয়সী অভিজিৎ দারিদ্র নিয়ে হাতে-কলমে কাজ করেছেন। দারিদ্রের নানা দিক নিয়ে স্ত্রী এসথের ডুফলোর সঙ্গে তার লেখা ‘পুওর ইকনমিক্স’ বইটিও বিশ্বব্যাপী সুনাম কুড়িয়েছে। অপর নোবেল বিজয়ী এসথের ডুফলোর সঙ্গে অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
আর মাইকেল ক্রেমার হার্ভার্ডের অর্থনীতি বিভাগে গেটস প্রফেসর হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি আমেরিকান একাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের ফেলো। ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের ইয়াং গ্লোবাল লিডারও মনোনীত হয়েছিলেন তিনি। অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি, এসথার ডুফলো এবং মাইকেল ক্রেমার তিনজনই অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন এবং বেশ কিছু বইয়ের লেখক।
অর্থনীতিতে নোবেল জয়ীদের মধ্যে ডুফলোই সর্বকনিষ্ঠ। ফরাসী ও মার্কিন নাগরিক ডুফলো হলেন গত ৫০ বছরে দ্বিতীয় নারী যিনি অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন। বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ডুফলোর স্বামী। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে বিনায়ক ডুফলোর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ করেছেন ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দের ২১শে ফেব্রুয়ারি।
এর আগে ভারতীয় বাঙালিদের মধ্যে অর্থনীতিতে নোবেল জিতেছিলেন অমর্ত্য সেন। আর বাংলাদেশের ড. মুহাম্মদ ইউনূস নোবেল জিতেছিলেন শান্তিতে।