ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের দাঁতমন্ডল এরফানিয়া আলিম সিনিয়র মাদরাসা কেন্দ্রের হল সুপার ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার দাঁতমন্ডল গ্রামের দরজ মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশের সহযোগিতায় আহত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
আহতরা হলেন শাহরিয়ার কামাল (১৬), আয়েত আলী (১৭), মফিজুল ইসলাম (১৫), রাজু মিয়া (১৭), মিনারা বেগম (১৫), লাখী আক্তার (১৬) ও হেপী আক্তার(১৬)। এরা সবাই খান্দুরা ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার পরীক্ষার্থী এবং হল সুপার জহিরুল ইসলাম খান্দুরা ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপারেনটেনডেন্ট।
পুলিশ ও আহত হল সুপার জহিরুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষার্থীদের আসন বিন্যাস থাকবে। কিন্তু সে নিয়ম না মেনে বাংলা ১ম পত্র, ২য় পত্র ও ইংরেজি ১ম পত্রের পরীক্ষা নেয়া হয়। পরে আসন পুনর্বিন্যাসের অনিয়মটি হলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দৃষ্টিতে আসলে শনিবার বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী পুনরায় আসন পুনর্বিন্যাস করা হয়।
বিষয়টি জানতে পেরে দাঁতমন্ডল মাদরাসার দাখিল পরীক্ষার্থী শেখ তানভির মিয়াসহ ৬-৭ জন, শনিবার রাত ৮টার সময় ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার পরীক্ষার্থীসহ হল সুপার জহিরুল ইসলামের কাছে আসেন। এবং আসন পরিবর্তনের বিষয়টি জানতে চায়।
তখন হল সুপার বলেন, আগে আসন বিন্যাসে অনিয়ম হয়েছে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নতুন করে আসন বিন্যাস করা হয়েছে। এ কথা বলার সাথে সাথেই তানভিরসহ কয়েকজন যুবক তার ওপর চড়াও হয়ে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় দেয়। সে সময় হল সুপারের চিৎকারে পাশের রুমে থাকা শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসলে শিক্ষার্থীদের উপরও হামলা চালায় তারা। এসময় স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যায়।
সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে চিকিৎসা দেয়। এসময় থানার অফিসার ইনচার্জ সাজেদুর রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম ভূইয়া হাসপাতালে তাদের দেখতে আসেন। চিকিৎসা শেষে আহত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দাতঁমন্ডল গ্রামে ফিরে না গিয়ে উপজেলা সদরে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক শরীফুজ্জামান চৌধুরী সুমনের বাসায় রাত্রিযাপন করেন।
শিক্ষক মো. জহিরুল ইসলাম এ ঘটনায় জড়িতদের সুষ্ঠু বিচার এবং তার ও পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দাবি জানান।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ‘অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে একজন শিক্ষকের ওপর হামলা চালানোর ঘটনা দুঃখজনক। আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব’
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা নাজমা আশরাফী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ঘটনার খুবই দুঃখজনক। আইন আইনের গতিতেই চলবে বলে জানান তিনি।