নওগাঁর মান্দায় এক মাদরাসাশিক্ষকের জমি দখলের চেষ্টা করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ব্রজেন্দ্রনাথ সাহা। বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের ঘোনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীরা পরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে তারা চলে যান। ঘটনার পর থেকে হুমকি অব্যাহত রয়েছে। ওই চেয়ারম্যান তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সভাপতি। ভুক্তভোগী উপজেলার ভারশোঁ মাদরাসাশিক্ষক।
৫৫ বছর আগে শিক্ষক জেহের আলীর ওয়ারিশরা তাদের জমিতে অসহায় আজিম উদ্দিন মণ্ডল ও নাজিম উদ্দিন মণ্ডলকে বাড়ি করার জন্য পৌনে আট শতক জমি দান করেন। দীর্ঘদিন থেকে তারা সেখানে বসবাস করে আসছেন এবং শিক্ষক জেহের আলীর জমির পূর্ব ও পশ্চিম দিক দিয়ে তারা চলাচল করেন। সম্প্রতি আজিম উদ্দিন গংরা শিক্ষক জেহের আলীর জমির পশ্চিম পাশে পাঁচ ফুট চওড়া জায়গা অটো চার্জার চলাচলের জন্য দাবি করেন। রাস্তাটি চওড়া করা হলে ওই জমিতে বাড়ি করা সম্ভব না। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্নভাবে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়।
এদিকে বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান ব্রজেন্দ্রনাথ সাহা তার ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার নিতাই, স্থানীয় হাসান আলী, আব্বাস আলী, রানা, আনসার-ভিডিপি সদস্যসহ প্রায় ১৫ জন লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে সেখানে যান। এরপর ট্রাক্টর করে ইটের খোয়া নিয়ে এসে ওই জায়গায় রাস্তা করার জন্য দখল করার চেষ্টা করেন। এ সময় ঘটনাস্থলে চেয়ারম্যান ব্রজেন্দ্রনাথ সাহা হাতে লাঠি-বাঁশ নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। শিক্ষক জেহের আলীর পরিবারের নারীরা তা প্রতিহত করার চেষ্টা করলে চেয়ারম্যান ব্রজেন্দ্রনাথ সাহা তাদের হাত কেটে নেয়ার নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। এ অবস্থায় নিরুপায় হয়ে ভুক্তভোগীরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ করেন। পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। কিন্তু ঘটনার পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যান ব্রজেন্দ্রনাথ সাহা বিভিন্নভাবে ভুক্তভোগীর পরিবারকে হুমকি অব্যাহত রেখেছেন।
শিক্ষক জেহের আলী সরকারের ছেলে সোহরাব হোসেন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান ব্রজেন্দ্রনাথ সাহার নেতৃত্বে তার লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে আমাদের জমির ওপর ইটের খোয়া বিছিয়ে জোরপূর্বক রাস্তা করছিলেন। আমার বোনেরা বাধা দিতে গেলে তিনি বিভিন্নভাবে মারপিট করে হাত কেটে ফেলার হুমকি দেন।
ইউপি চেয়ারম্যান ব্রজেন্দ্রনাথ সাহা বলেন, কোনো জায়গা জোরপূর্বক দখলও করা হয়নি। সেখানে আগে থেকেই নিচু রাস্তা ছিল। মাটি নিয়ে সেখানে ভরাট করা হয়েছে। আমার হাতে যে লাঠি ছিল, সেটা হচ্ছে খুঁটি। এ ছাড়া আমি কোনো লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে যাইনি এবং কাউকে হুমকি-ধমকিও দেয়া হয়নি।
মান্দা থানার ওসি মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, ৯৯৯ নম্বর থেকে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। বর্তমানে রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে।