‘ড. হাকীম মো. ইউছুফ হারুন ভুঁইয়া হাসপাতাল’ নামে বাস্তবে সরকার অনুমোদিত কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। তবে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় এই নামে একটি হাসপাতাল রয়েছে দেখিয়ে জনৈক ডা. মুহাম্মদ ইউনুস নামের একজনকে ইন্টার্নশিপের সনদ দিয়ে ধরা পড়েছে হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয়। সরেজমিনে তদন্ত করে এই জালিয়াতি উদ্ঘাটন করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, হাকীম ইউছুফ হারুন ভুঁইয়া ওয়াক্ফ প্রতিষ্ঠান হামদর্দের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
প্রাপ্ত নথিপত্রে দেখা যায়, হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাডে এ বছরের ১৭ জুলাই ডা. মুহাম্মদ ইউনুস নামে একজনকে ইন্টার্নশিপের সনদ প্রদান করে হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয়। সনদে উল্লেখ করা হয়, ইউনুস ‘ড. হাকীম মো. ইউছুফ হারুন ভুঁইয়া হাসপাতাল’ থেকে মেডিসিন, গাইনোকোলজি ও সার্জারিতে যথাক্রমে ছয়, তিন ও তিন মাসের ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করেছেন। ইউনুসসহ অনেককে এই ধরনের সনদ দেয়ার ঘটনায় অভিযোগ যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর ডা. হাবিবুর রহমান গত ১২ সেপ্টেম্বর অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ বিভাগের পরিচালককে চিঠি দেন। চিঠিতে গজারিয়ায় ‘ড. হাকীম মো. ইউছুফ হারুন ভুঁইয়া হাসপাতাল’ নামে কোনো হাসপাতাল আদৌ রয়েছে কি না এবং থাকলে এটি সরকার অনুমোদিত কি না তা জানাতে বলা হয়। পরে ১৭ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ বিভাগের পরিচালক ডা. আমিনুল হাসান বিষয়টি সম্পর্কে জানানোর জন্য মুন্সীগঞ্জের সিভিল সার্জনকে চিঠি দেন।
সরেজমিনে পরিদর্শন করে পরদিন মুন্সীগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আমিনুল হাসানকে দেয়া এক চিঠিতে জানান, জেলার সকল ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক ও অন্যান্য স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা অত্র দপ্তরে সংরক্ষিত থাকলেও ‘ড. হাকীম মো. ইউছুফ হারুন ভুঁইয়া হাসপাতাল’ নামে কোনো হাসপাতাল অত্র দপ্তরে সংরক্ষিত নেই।
মুন্সীগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি তার চিঠিতে আরও জানান, প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠানটি অনুমোদিত কি না সে বিষয়ে বৈধ কাগজপত্র দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করে। এ বিষয়ে জানার জন্য হামদর্দের পরিচালক ইউছুফ হারুন ভুঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া সম্ভব হয়নি।