ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত মূল হোতার বিচারের দাবি করায় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহীনের ওপর হামলার উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসের বাসে তল্লাশি করা হয়েছে। রোববার সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী শেখ পাড়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান ইলিয়াস জোয়াদ্দারের নাম উল্লেখ ও কয়েকজনকে অজ্ঞত আসামি করে শৈলকূপা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহীন।
এদিকে বিকাল ৫টার দিকে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আনিছুর রহমানকে আহ্বায়ক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সহকারী প্রক্টর নছির উদ্দিন এবং পরিবহণ অফিসের কর্মকর্তা মওদূদ আহমেদ পারাগ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ডায়েরি সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগ সভাপতিকে খুঁজতে ঝিনাইদহ থেকে ক্যাম্পাসগামী শিক্ষার্থী বহনকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৭টি বাসে তল্লাশি চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ইলিয়াস জোয়ার্দ্দার, রাসেল জোয়ার্দ্দার, মান্নান, আবুল বাশারসহ ৮-১০ জন বহিরাগত সন্ত্রাসীরা দেশিয় অস্ত্র নিয়ে এ তল্লাশি করে।
এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হয়রানিও করা হয় বলে জানা গেছে। হঠাৎ শিক্ষার্থীদের বাস থামিয়ে দেশিয় অস্ত্র নিয়ে বাসে তল্লাশি করায় বাসে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পরে এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে মৌন মিছিল করেন শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সঙ্গে দেখা করে। একই সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা চেয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অতি দ্রুত শনাক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের স্থায়ী বরখাস্তের দাবি করেন।
এ ছাড়াও নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয় ছাত্রলীগ। অন্যথায় সোমবার থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে জানান তারা।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নীরব ভূমিকা পালন করেছেন অভিযোগ করেন ছাত্রলীগ সভাপতি।
ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, আমাকে মারার জন্য বিশ্ববিদ্যালের গাড়ি তল্লাশি করা হচ্ছে শুনে আমি ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. আনিছুর রহমানকে ফোন করি। এ সময় তিনি আমাকে বলেন যে, এটা ক্যাম্পাসের বাহিরের ঘটনা। আমার কিছু করার নেই। এ ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়েছে।
তিনি বলেন, এ ঘটনার পেছনে নিয়োগ বাণিজ্যের মূল হোতা জড়িত রয়েছে। তাকে ধরলেই সব বের হয়ে যাবে। এ ঘটনায় বিচার না হলে থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে ক্যাম্পাসে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে ছাত্রলীগ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান ইলিয়াস জোয়াদ্দার বলেন, ‘আমার বাড়ি এবং দোকান ওই বাজারেই। আমি ওখানে ছিলাম, তবে ঝামেলা না হয় এজন্য তাদের চলে যেতে বলেছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী বলেন, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। এ ঘটনায় যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্মচারী জড়িত থাকে তাহলে আমারা তাদের শাস্তির আওতায় আনবো।
প্রসঙ্গত, শনিবার নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত এবং মূল হোতা সাবেক প্রক্টর মাহবুবর রহমানের শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।