পাবনায় সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ করেছে প্রতিবেশী এক যুবক। ধর্ষণের পর শিশুটিকে আশংকাজনক অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ জুলাই) দুপুরে জেলার চাটমোহর উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনা পর থেকেই ধর্ষক সবুজ সরকার পলাতক রয়েছে। শিশুটি ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
চাটমোহর সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার তাপস কুমার পাল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে ভবানীপুর গ্রামের উত্তম সরকারের মেয়ে পূজা সরকার (৭) বাড়ির পাশের একটি ঘরে একা টেলিভিশন দেখছিল। এ সময় সুযোগ বুঝে প্রতিবেশী সবুজ জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে। শিশুটির আর্তচিৎকারে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে দ্রুত আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।
এসময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শিশুটি সংজ্ঞাহীন হয়ে পরে। বর্তমানে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। আমরা খবর পাওয়ার পর পরই ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে গিয়ে শিশুটির খোঁজ খবর নেই। ধর্ষককে আটকের জন্যে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
শিশুটির মা মুক্তি সরকার বলেন, আমার জীবনে এ ধরনের পাশবিক নির্যাতন আমি দেখি নাই। যে ব্যাক্তি আমার মেয়ের এই অবস্থা করেছে, আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই- বলেই কান্নাকাটি শুরু করেন।
শিশুটির বাবা উত্তম সরকার কোন কথাই বলতে পারেনি। তিনি মাথায় হাত দিয়ে হাসপাতালের করিডোরে বসে শুধু চোখের পানি ঝড়াচ্ছেন। প্রতিবেশী কয়েকজন ক্ষোভের সাথে বলেন, সারাদেশে মাদকের মতো ভয়াবহ ভাবে বাড়ছে এই ধর্ষণের বিষয়টি। অধিকাংশ ধর্ষণ মামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ার কারণেই একের পর এক এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন বলে তারা মন্তব্য করেন। শিশুটির চাচা গৌতম সরকার বলেন, খবর পাওয়ার পরপরই আমর ভাতিজিকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। কি হবে বুঝতে পারছি না। মেয়েটি এখনো অজ্ঞান হয়ে পরে আছে হাসপাতালের বিছানায়। শুনেছি অপারেশন করে কয়েকটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। আমরা দিনমজুর মানুষ, সুষ্ঠু বিচার পাব কিনা সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন। তবে এমন পাশবিক নির্যাতনের অবশ্যই বিচার হওয়া দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আমার ভাতিজির মতো অন্য কোন মেয়ের জীবনে যেন এমন ঘটনা না ঘটে। ইন্টার্ন চিকিৎসক মনিরুল ইসলাম রুবেল বলেন, মেয়েটি দুপুর দুই টার দিকে হাসপাতালে ভর্তির পরপরই আমাদের সিনিয়র চিকিৎসকদের একটি টীম গঠন করে অপারেশন করা হয়। সফলভাবে অপারেশন সম্পন্ন করা হয়েছে। মেয়েটি অবচেতন অবস্থায় আছে, পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আশা করছি ঠিক হয়ে যাবে।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ওয়ান ষ্টপ ক্রাইসিস সেলের আইন কর্মকর্তা অ্যাড. শামিমা নাসরিন সোনিয়া বলেন, মেয়েটি ভর্তির পর থেকেই আমরা তার পাশে রয়েছি। আর্থিক ও আইনগত সকল সহায়তা প্রদান করা হবে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।