দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে জিতেছেন, বাজেট বরাদ্দ এবং অর্থ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্ট প্রজ্ঞাপনও আছে তবু, সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেলের (উচ্চতর বেতন স্কেল) টাকা পাচ্ছেন না সরকারি কলেজের সাবেক ও বর্তমান ৫৬৩ জন অধ্যাপক।
ভুক্তভোগী অধ্যাপকরা অভিযোগ করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসাবরক্ষণ ও অর্থ কর্মকর্তা ‘অযৌক্তিকভাবে’ এই টাকা ছাড় করছেন না। শুধু অর্থ দিতে গড়িমসিই নয়, শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণেও অনীহা এই কর্মকর্তাদের। অথচ এ কাজগুলো করাই তাদের দায়িত্ব। সর্বোচ্চ আদালতের রায় এভাবে উপেক্ষা করায় প্রবীণ শিক্ষকদের ব্যাপক মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার মতামত জানার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগীরা জানান, সরকারি চাকরিজীবীরা এক সময় চাকরি জীবনে আট বছর ও ১০ বছর পূর্তিতে টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পেতেন। এক সময়ে তাঁরাও এই সুবিধার প্রাপ্য হন, কিন্তু অন্যায়ভাবে তাদেরকে দেয়া হয়নি। অথচ অন্যান্য সকল ক্যাডারের সদস্যগণ এই সুবিধা ভোগ করেছেন। এ নিয়ে হাইকোর্টে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে একটি রীট দায়ের করা হয়। আদালত ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ১১ নভেম্বর রিটকারী ৫৬৩ জন শিক্ষককে ‘সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেলের’ টাকা দেয়ার নির্দেশ দেন। রিটের নম্বর ১০৭০৪/২০১২। আবেদনকারীদের তালিকার এক নম্বরে অবসরে যাওয়া অর্থনীতির অধ্যাপক মো: মোজাহার হোসেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় সাবেক ও বর্তমান এসব শিক্ষকদের বকেয়া হিসেবে প্রায় ২২ কোটি ২৩ লাখ টাকা বরাদ্দ করে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়েরও প্রশাসনিক আদেশ রয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসাবরক্ষণ ও অর্থ কর্মকর্তার কাছে চিঠি লিখেছে। কিন্তু কোন আদেশই মানছেন না শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসাবরক্ষণ ও অর্থ কর্মকর্তা। নানাভাবে এই সব প্রবীণ শিক্ষকদের হয়রানি করা হচ্ছে। সরকারি কলেজের শিক্ষকদের এই বকেয়া পাওনা পরিশোধের জন্য প্রায় ২২ কোটি ২৩ লাখ টাকার বরাদ্দপত্রও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসাবরক্ষণ ও অর্থ কর্মকর্তার নিকট যথাসময়ে পৌঁছেছে।
জানা যায়, এই হয়রানির বিরুদ্ধে ভূক্তভোগী শিক্ষকদের পক্ষ হতে কম্পট্রেলার জেনারেল অব একাউনন্টস বরাবর অভিযোগ দায়ের করেও কোন সুরাহা হয় নি।
যারা এই অর্থ প্রাপ্য হয়েছেন তারা অধিকাংশই অবসরে চলে গেছেন এবং অন্তত ১৫ জন ইতিমধ্যে মারাও গেছেন।
‘সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেলের’ এই বকেয়া টাকা পরিশেধের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ভুক্তভোগী শিক্ষকেরা অভিযোগ করেছেন, এত কিছুর পরেও নানা অজুহাতে তাঁদের প্রাপ্য বকেয়া দিতে গড়িমসি করা হচ্ছে।