উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান শাখায় জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান ও উচ্চতর গণিত দুই পত্র বিশিষ্ট। উভয় পত্র যোগ করলে আনুমানিক কোনোটি সাতশ’ পৃষ্ঠা, কোনোটি ছয়শ’ পৃষ্ঠা কোনোটি পাঁচশ’ আশি পৃষ্ঠার মতো হয়। যেহেতু অনেক প্রকাশনা রয়েছে তাই পৃষ্ঠা সংখ্যা এ হিসাবের চেয়ে কম-বেশি হতে পারে।
উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষা বর্ষ দু’বছর হলেও মূলত দু’বছর পড়ানো হয় না। প্রথম বর্ষ হতে ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফল পর্যন্ত দু’বছর। মধ্যখানে তো নানা রকম পরীক্ষা, সাপ্তাহিক ছুটি, জাতীয় ছুটি, ধর্মীয় দিবস উপলক্ষে ছুটি আছে। মূলত ক্লাসে সিলেবাস সমাপ্ত করা যায় না বিধায় শিক্ষার্থীরা কোচিং সেন্টারে দৌঁড়ায়। কোচিং সেন্টারে মাসিক ভিত্তিতে হলে আনুমানিক চার হাজার হতে দশ হাজার টাকা, সাবজেক্টওয়ারী হলে আনুমানিক আট হাজার হতে দশ হাজার টাকা, সেমিষ্টারওয়ারী হলে আনুমানিক পঞ্চাশ হাজার হতে ষাট হাজার টাকা দিতে হয়।
উক্ত আর্থিক হিসাব আমি কয়েকটি কোচিং সেন্টার হতে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দিলাম। কম/বেশি হতে পারে। কোনো কোনো কোচিং সেন্টার মানবিক কারণে ফ্রিও পড়াতে পারে। এগুলো এখানে ধর্তব্য বিষয় নয়। এ কারণে শিক্ষার্থী যতই মেধাবী হোক নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবার হতে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ানো দুরূহ ব্যাপার।
এদিকে মাদরাসায় আলিম শ্রেণিতে মানবিক শাখায় শরহে বেক্বায়া, নুরুল আনওয়ার, কুরআন শরিফ, হাদিস শরিফ, আইসিটি, অর্থনীতি/পৌরনীতি প্রভৃতি বিষয়গুলো ব্যাপক ও বিস্তারিত। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজসমূহের নির্ধারিত বিষয়সমূহ ব্যাপক আকারের। ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ফাজিল, কামিলের বিষয়সমূহও বড় আকারের। ওখানেও উল্লেখিত সময়ে সিলেবাস শেষ করা কষ্টকর।
তাই বিভিন্ন প্রকার ছুটির দিবস কমিয়ে এবং ৪০/৪৫ মিনিটের পিরিয়ড প্রথা পরিবর্তন করে প্রতিটি পিরিয়ড কমপক্ষে ৬০ মিনিট করলে সিলেবাস শেষ না হওয়ার কোনো সুযোগ তেমন থাকবে বলে মনে হয় না। এতে আশা করা যায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘব হবে। অভিভাবকরাও আর্থিক চাপ হতে মু্ক্তি পাবে। গরিব পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে অধ্যয়নের অবারিত সুযোগ পাবে।
লেখক: শিক্ষক