দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্বের একটি প্রদেশ কাওয়াজুলু নাটাল। এখানকার উথুকেলা নামক স্থানটিতে এইডস ও কিশোরী মাতৃত্বের হার সবচেয়ে বেশি। সেই মারণব্যাধি এইডস আর কিশোরী মাতৃত্বের হার কমাতে এবং মেয়েদেরকে পড়াশোনায় আগ্রহী করে তুলতে উথুকেলা পৌরসভা চালু করে কুমারী বৃত্তির।
এই বৃত্তি পেয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়েছেন ১৬ জন ছাত্রী। তাদের মধ্যে একজন বলছিলেন আমি নিজেকে রোগমুক্ত রাখতে চাই। তিনি বলছিলেন, আমি নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে চাই এবং এইচআইভিতে আক্রান্ত হতে চায় না।
তিনি আরো বলছিলেন আমি মনে করি অন্যান্য মেয়েদের আমাদের অনুসরণ করা উচিত যাতে জীবনে আরো অনেক কিছু করার সুযোগ পেতে পারে। যখন এই প্রকল্প প্রথম চালু করা হয় তখন উথুকেলার মেয়র ডুডু মাজিবুকো বলেছেন এই কুমারীত্বের পরীক্ষা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বা বিশ্ববিদ্যালয় করবে না।
যেসব স্কুলছাত্রী ইতিমধ্যে এই পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে তাদেরকে নতুন করে আর কোনো টেস্ট করা হবে না। মেয়র ডুডু মাজিবুকো বলছিলেন তারা শুধুমাত্র মেয়েদেরকে উৎসাহিত করছেন সুস্থতা ও জীবন সম্পর্কে।
তিনি বলছিলেন আমারা শুধু বলছি সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন কর। যতক্ষণ পর্যন্ত না নিজেকে প্রস্তুত করতে পারবে জগতের প্রতিকূলতা সম্পর্কে ততক্ষণ পর্যন্ত নিরাপদে থাকো। পরে নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারবে। ২০১৩ সালে সরকারের সমর্থনে করা এক জরিপে দেখা যায় কিশোরী মাতৃত্বের সংখ্যা সেখানে এক লাখ। যেটা দুই বছর আগে ছিল ৬৮ হাজার। আর দশজনের মধ্যে একজনের বেশি মানুষ এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত।
চলতি বছরের শুরুর দিকে এই বৃত্তির প্রকল্প ঘোষণা করা হলে এটা নিয়ে তুমুল বিতর্ক হয়। বিতর্ক হয় কুমারীত্ব পরীক্ষার পদ্ধতি নিয়ে এবং কুমারীত্বই একজনের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের যোগ্যতার একমাত্র মাপকাঠি হতে পারে কিনা সেই বিষয় নিয়ে। এখন দেশটির লিঙ্গ সমতা বিষয়ক কমিশন ঘোষণা করেছে নারী শিক্ষার্থীদের কুমারীত্বের ওপর দেওয়া এই বৃত্তি মৌলিকভাবে বৈষম্যমূলক।
এটাকে বাতিল করা উচিত বলে রায় দিয়েছে। যদিও এই ব্যাপারে উথুকেলা পৌরসভার কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। কমিশন বলছে তাদেরকে ৬০ দিন সময় দেওয়া হলো নিয়মটি বাতিল প্রসঙ্গে তাদের প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য।