বুয়েটে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ছাত্ররাজনীতি। দাবি উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের শিক্ষাঙ্গনে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার। তবে ডাকসুর সাবেক ভিপি-জিএসরা বলছেন, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করাই সমাধান নয়। বন্ধ করতে হবে ক্যাডারভিত্তিক, দখলদারিত্ব ও পেশিশক্তির রাজনীতি। শনিবার (১২ অক্টোবর) বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানা যায়। ডাকসুর সাবেক নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন- মাহমুদ আজহার, রফিকুল ইসলাম রনি ও রুহুল আমিন রাসেল।
সাক্ষাৎকারে আরও জানা যায়, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ না করে বরং উন্মুক্ত ও স্বাধীন করতে হবে বলে মনে করেন স্বাধীন বাংলাদেশে ডাকসুর প্রথম ভিপি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি, প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ বলেন, ছাত্ররাজনীতি আজ ফ্যাসিস্ট দখলদারিত্বের দ্বারা আক্রান্ত। এই সুযোগ নিয়ে মহল বিশেষ ছাত্র রাজনীতির বিরুদ্ধে ‘বিরাজনীতিকরণ’ এর অস্ত্র প্রয়োগ করতে উদ্ধত হয়েছে। জাতীয় রাজনীতিতে আরও ঘৃণ্য অপরাধ ও অপকর্ম চলছে, তাহলে কি ‘রাজনীতিও’ নিষিদ্ধ করতে হবে?
ছাত্র রাজনীতি নিয়ে সিপিবি সভাপতি আরও বলেন, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি কখনো ছিল না। ছাত্র ইউনিয়নসহ আদর্শবাদী বাম সংগঠনগুলোকে কাজ করতে দেয়া হতো না। সেখানে ছাত্রলীগের ফ্যাসিস্ট দখলদারিত্ব ছিল। যা ছিল না, তা নিষিদ্ধ হয় কীভাবে? যেটি সত্য, তা হলো, আবরার হত্যার জন্য ছাত্র রাজনীতি মোটেও দায়ী নয়। বরং ছাত্র রাজনীতি না থাকার কারণেই আবরার হত্যার মতো ‘স্যাডিস্টিক’ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারল। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের ফ্যাসিস্ট দখলদারিত্বকে ছাত্র রাজনীতি বলে আখ্যায়িত করা যায় না। এটি নিছকই অপরাধ চক্র পরিচালিত অপরাজনীতি। এ ধরনের ঘটনা বন্ধ করতে হলে অপরাজনীতি ধ্বংস করতে হবে এবং ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ না করে বরং ছাত্র রাজনীতি উন্মুুক্ত ও স্বাধীন করতে হবে। ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলো অনেকটা মাথা ব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার প্রেসক্রিপশনের মতো ব্যাপার। ছাত্র সমাজ দেশ প্রেমিক হিসেবে গড়ে ওঠুক, সেটা কি সবার কাম্য নয়? দেশপ্রেম হলো সর্বাংশে একটি রাজনৈতিক বিষয়।
সিপিবি সভাপতি বলেন, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার অর্থ কি এই হবে না যে, ছাত্রদের দেশ প্রেমিক হয়ে ওঠার পথকে রুদ্ধ করে দেয়া। বুঝতে হবে যে, রাজনীতি ও দলবাজি এক জিনিস নয়। দলবাজি নিষিদ্ধ করা উচিত। কিন্তু রাজনীতি নিষিদ্ধের বদলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আরও শক্তিশালীভাবে সুষ্ঠু ধারার ছাত্র রাজনীতি প্রবাহিত হওয়ার সুযোগ করে দেয়া উচিত।