শিক্ষাবর্ষের চার মাস পেরিয়ে গেলেও প্রকাশিত হয়নি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডসহ পাঁচ বোর্ডের জেএসসির বৃত্তির ফল। অথচ জেএসসির ফলাফলের সব তথ্যই রয়েছে বোর্ডগুলোতে। সেখান থেকে ক্রাইটেরিয়া অনুযায়ী বৃত্তিপ্রাপ্তদের তালিকা করা তেমন কঠিন কোনো কাজ নয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, বেশ কিছু উপজেলায় বৃত্তি পাওয়ার মতো মেধাবী শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি দেওয়ার মতো প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষার্থী কিছু উপজেলায় নেই। ফলে বোর্ডগুলোকে যদি বৃত্তির ফল প্রকাশ করতে হয় তাহলে কিছু উপজেলায় নির্ধারিতর চেয়ে কমসংখ্যক শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিতে হবে। গত বছর জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, ইতোমধ্যে যশোর, বরিশাল, কুমিল্লা ও মাদরাসা বোর্ডের বৃত্তির ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এখনও ফল দিতে পারেনি ঢাকা, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, রাজশাহী ও সিলেট বোর্ড। অথচ প্রতিবছর সাধারণত মার্চ মাসে বৃত্তির ফল প্রকাশ করা হয়।
এ ব্যাপারে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের ক্রাইটেরিয়া অনুযায়ী বৃত্তি দিতে হয়। কিন্তু কিছু উপজেলায় বৃত্তির জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষার্থী আমরা পাইনি। এসব বৃত্তি ফেরত দিলে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হবে। ফলে ওই বৃত্তিগুলো পুরো জেলায় অথবা জাতীয়ভাবে বণ্টন করে দেওয়া যায় কিনা সে জন্য আমরা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের কাছে মতামত চেয়েছি। কারণ তারাই বৃত্তি দেওয়ার মূল কর্তৃপক্ষ। তিনি আরও বলেন, আমি দ্রুত এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির সঙ্গে কথা বলব। চলতি সপ্তাহেই বৃত্তির ফল প্রকাশের চেষ্টা করব আমরা।
জানা যায়, জেএসসির ফলের ভিত্তিতে দুটি ক্যাটাগরিতে বর্তমানে ৪৬ হাজার ২০০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হয়। এর মধ্যে ট্যালেন্টপুল বা মেধাবৃত্তির সংখ্যা ১৪ হাজার ৭০০ এবং সাধারণ বৃত্তির সংখ্যা ৩১ হাজার ৫০০। মেধাবৃত্তিপ্রাপ্তরা এককালীন ৬৫০ টাকা ও মাসে ৪৫০ টাকা পাবে। সাধারণ বৃত্তিপ্রাপ্তরা এককালীন ৩৫০ টাকা আর প্রতি মাসে ৩০০ টাকা করে পাবে। সব বৃত্তিপ্রাপ্ত বিনা বেতনে পড়াশোনার সুযোগ পাবে।
জেএসসির বৃত্তি নীতিমালায় বলা হয়েছে, পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর ভিত্তিতে বৃত্তি দেওয়া হবে। জিপিএ প্রক্রিয়ায় একাধিক শিক্ষার্থী একই গ্রেড পেলে চতুর্থ বিষয় ছাড়া প্রাপ্ত মোট নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম তৈরি করা হবে। আবার চতুর্থ বিষয় ছাড়া প্রাপ্ত মোট নম্বর একই হলে চতুর্থ বিষয়সহ প্রাপ্ত মোট নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম তৈরি করা হবে। এর পরও চতুর্থ বিষয়সহ প্রাপ্ত মোট নম্বরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা একাধিক হলে বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ গণিতে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে।