বৈশ্বিক মহামারি করোনায় থমকে গেছে পৃথিবী। তবে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগস্ত হচ্ছে শিক্ষা। গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ আছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৩১ মে থেকে সরকারি-বেসরকারি সকল অফিস খোলার ঘোষণা এবং গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে গণপরিবহন চলাচল ও স্বাভাবিক জীবনযাপন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সব পাবলিক পরীক্ষা স্থগিত থাকলেও ইতোমেধ্যে কওমি মাদরাসায় পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু উদ্বিগ্ন সময় কাটছে না এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন, দেশের সবকিছু যখন চলছে স্বাভাবিক নিয়মে তাহলে শুধুমাত্র এইচএসসি পরীক্ষায় কালক্ষেপণ কেন? একথা ভাবার কারণ নেই যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ বিধায় শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে আছে। দেশের কোথাও কোন সামাজিক দুরত্ব মানার বালাই নেই বরং বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে বা গোপনে ছাত্রছাত্রীদের কোচিং চলছে। অথচ দীর্ঘ ছুটির কারণে নানাভাবে শিক্ষার্থীদের জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আমাকে অনেক শিক্ষার্থী জানিয়েছে, দীর্ঘ ছুটির কারণে অনেক ছাত্র উপার্জনের জন্য বিভিন্ন কাজে নেমে পড়েছে এবং এ সময়ে বিয়ে হওয়ার কারণে বহু ছাত্রীর পড়াশুনা বন্ধ হয়ে গেছে। পরীক্ষার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত থাকলে এরকম অপ্রত্যাশিত অনেক ঘটনাই ঘটতে থাকবে। দেখা যাবে এইচএসসি পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থীদের বড় একটা অংশ অনুপস্থিত।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষায় এখন সরকারের প্রধান ২টি চ্যালেঞ্জ হল, এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া ও একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু করা। তবে সময়ের হিসেবে এখন একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরুর চেয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা দিকে নজর দেয়া উচিত। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। কারণ এ পরীক্ষার ফলের উপরই তার ভবিষ্যৎ জীবন নির্ভর করে। আর এই পরীক্ষা যদি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে তাহলে অকালেই ঝরে যাবে অনেক মুকুল।
সময় এসেছে এইচএসসি পরীক্ষার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে যত দ্রুত সম্ভব এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হবে ততই আমাদের জন্য মঙ্গল।
লেখক : মো. পারভেজ কামাল তরু, প্রভাষক, বাংলা বিভাগ কলসকাঠী ডিগ্রি কলেজ, বাকেরগঞ্জ, বরিশাল।
[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন]