আসে না শিক্ষক-শিক্ষার্থীএইচএসসিতে দুই পরীক্ষার্থীর পাস করেনি কেউ

হিলি প্রতিনিধি |

দুই শ্রেণি মিলিয়ে শ-খানেক শিক্ষার্থী থাকলেও তাদের কেউ আসে না কলেজে। এ অজুহাতে আসেন না শিক্ষকরাও। তাদের কেউ কেউ আবার ভিন্ন কর্ম বা অন্য প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন। এসব কারণে দীর্ঘদিন ধরে পাঠদান হয় না দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার বেপারীটোলা কলেজে। এবারের এইচএসএসসি পরীক্ষায় এ কলেজ থেকে দুজন শিক্ষার্থী অংশ নিলেও পাস করতে পারেনি তাদের কেউ। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেড় যুগে এমপিওভুক্ত না হওয়ায় কলেজটির এ দশা।

জানা গেছে, ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে বেপারীটোলা আদর্শ কলেজের কার্যক্রম শুরু হয়। পাঠদান শুরু হয় ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে। ২ একর ২৯ শতক জমি নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজে সুবিশাল ক্যাম্পাস ও নিজস্ব ভবন। অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও কর্মচারী মিলিয়ে কাগজে-কলমে জনবল আছে ১৯ জন। ২০১৮-১৯ সেশনে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে এ কলেজের নয়জন শিক্ষার্থী নাম নিবন্ধন করে। শেষ পর্যন্ত অংশ নেয় দুজন। তবে এদের কেউই কৃতকার্য হতে পারেনি।

এর আগে ২০১৭-১৮ সেশনে এইচএসসিতে তিনজন রেজিস্ট্রেশন করলেও পাস করে কেবল একজন। ২০১৬-১৭ সেশনে ছয়জন পরীক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করলেও সেবারও কোনো শিক্ষার্থীই পাস করতে পারেনি।  পরীক্ষার্থী বর্তমানে ওই কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষে শিক্ষার্থী রয়েছে ৫৫ জন, যার মধ্যে মানবিক শাখায় আছে ৪১ জন, বিজ্ঞান শাখায় ৩ ও বাণিজ্য শাখায় ১১ জন। এ বছর একাদশ শ্রেণীতে তিন শাখা মিলিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে আরো ৪২ জন। তবে এসব শিক্ষার্থীর কেউ কলেজে আসে না।

সম্প্রতি সরেজমিনে বেপারীটোলা আদর্শ কলেজে গিয়ে দেখা যায়, অফিস রুম খোলা থাকলেও শ্রেণীকক্ষের দরজায় তালা ঝুলছে। কলেজের বারান্দার দক্ষিণ অংশে বেশকিছু উঠতি বয়সের ছেলে বসে আড্ডা দিচ্ছে। আর বারান্দার মাঝ বরাবর কিছু ছাগল ঘুমিয়ে আছে। 

কলেজে উপস্থিত থাকা নজরুল ইসলাম ও নুর ইসলাম নামের দুই অফিস সহকারী জানালেন, তারা উপস্থিত থাকলেও কোনো শিক্ষক আসেননি। কলেজ এমপিওভুক্ত না হওয়ায় অনেক শিক্ষক ক্লাস করতে আসেন না। হাজিরা খাতায় অনেক শিক্ষার্থীর নাম থাকলেও তারা কোনোদিন ক্লাসে আসেনি।

তারা বলেন, এখানে বেশির ভাগ মেয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। যেসব মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় বা পরিবার পড়ালেখা করাতে চায় না, তারাই এ কলেজে ভর্তি হয়। এ কারণে কোনো শিক্ষার্থী ক্লাসে আসে না।

কলেজের অধ্যক্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, অধ্যক্ষ পলাশ হোসেন বিরামপুর উপজেলার বিজুল দারুল হুদা কামিল মাদরাসায় সিনিয়র প্রভাষক (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) পদে চাকরি করেন। ওই প্রতিষ্ঠানে ১৯৯৮ সালে তিনি এমপিওভুক্ত হয়েছেন।

কলেজে সাংবাদিকের উপস্থিতির খবর শুনে তিন শিক্ষক কলেজে উপস্থিত হন। এদের মধ্যে তরিকুল ইসলাম ও নুরুন্নবী নামের দুই শিক্ষক বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে কলেজে পাঠদান হয় না। ১৫-১৬ বছর পার হলেও এমপিওভুক্ত না হওয়ায় অনেক শিক্ষক আগের মতো কলেজে আসেন না। এ কারণেই শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় খারাপ করছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025660991668701