করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এড়াতে এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র বিতরণ স্থগিত করেছে শিক্ষাবোর্ডগুলো। ঢাকা ও রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারা শনিবার বিকেলে দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, কেন্দ্রসচিবদের বোর্ডে এসে প্রবেশপত্র নেওয়ার কথা ছিল। তারা বোর্ডে এলে বিপুল জনসমাগম ঘটবে। আপাতত প্রবেশপত্র বিতরণ স্থগিত করা হয়েছে। ঢাকা বোর্ডেও ওয়েবসাইটে নোটিশ দেয়া হয়েছে।
ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীনস্ত সব কলেজ ও জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম আমিরুল ইসলামের স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত পত্রে শনিবারে বলা হয়, ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র বিতরণ কার্যক্রম ২৮ মার্চ ২০২০ তারিখ পর্যন্ত অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হল। পরীক্ষার্থীদের নিজ বাসায় থেকে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
পহেলা এপ্রিল থেকে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু কথা রয়েছে। এ পরীক্ষা নিয়ে শঙ্কা ভর করেছে কলেজ অধ্যক্ষ ও অভিভাবকদের মনে। সারাদেশের প্রায় ১২ লাখ শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেবে। দেশজুড়ে আড়াই হাজারের বেশি পরীক্ষা কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সরকার থেকে বড় ধরনের লোক সমাগম আয়োজনে নিষেধ করা হলেও ১২ লাখ পরীক্ষার্থীর পাশাপাশি এ পরীক্ষায় শিক্ষক, ম্যাজিস্ট্রেট, আইনশৃংখলা বাহিনী কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে আরও প্রায় তিন লাখ মানুষের সম্পৃক্ততা রয়েছে। মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা লকডাউন করা হয়েছে। এ অবস্থায় সারাদেশে একযোগে অনুষ্ঠিতব্য এ পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে শিক্ষা প্রশাসনে জোর আলোচনা রয়েছে।
এদিকে, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা পেছানোর কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যদিও কোনো কোনো সামাজিক মাধ্যম ও চটকদারি খবর পরিবেশনে সব্যসাচী গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, ‘আন্তঃজেলা শিক্ষাবোর্ড। শনিবার (২১ মার্চ) সকল বোর্ডের চেয়ারম্যানরা সভা করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।” আসলে এটি ডাহা মিথ্যা কথা।
দৈনিক শিক্ষার এক প্রশ্নের জবাবে শনিবার দুপুরে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক বলেন, ‘আজ শনিবার বোর্ডে কোনো সভায় হয়নি। পরীক্ষা পেছানোর কোনো নীতিগত বা অন্যকোনোভাবে সিদ্ধান্ত হয়নি। পরীক্ষা স্থগিত বা পেছানো নিয়ে আমার সাথে আজ কোনো সাংবাদিকের সঙ্গে কথা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা পেছানোর ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত সবাইকে জানানো হবে।’ পরীক্ষা পেছানোর সিদ্ধান্ত নিতে নীতি বা অনীতির কোনো বিষয় নেই। পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
উল্লেখ্য, আগামী ১ এপ্রিল বাংলা (অবশ্যিক) প্রথম পত্র দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ৪ মে পর্যন্ত তত্ত্বীয় পরীক্ষা আয়োজন হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর ৫ মে ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হয়ে ১৩ মে পর্যন্ত চলার কথা রয়েছে।