শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ ও অন্যান ফি বাবদ জনপ্রতি ৪০ হাজারেরও বেশি টাকা নিচ্ছে রাজধানীর বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ। সরকারিভাবে এইচএসসির ফরম পূরণের ফি ২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও তা মানছে না প্রতিষ্ঠানটি। প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ৩৮ হাজারের বেশি টাকা নিয়েছে কলেজটি।
অভিভাবকদের জিম্মি করে শিক্ষার্থী প্রতি অতিরিক্ত ৩৮ হাজার টাকার বেশি আদায় করলেও কর্তৃপক্ষের দাবি, টিউশন ফি বাবাদ অতিরিক্ত ফি নেয়া হচ্ছে। ফরমপূরণে অতিরিক্ত ফি নেয়ায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
প্রতিষ্ঠানটির সাথে সংশিষ্টদের দাবি, ফরমপূরণে বোর্ড নির্ধারিত ফি নেয়া হচ্ছে। তবে, আট মাসের টিউশন ফি ও মেডিকেল ফি আদায় করা হচ্ছে। আটমাসের টিউশন ফি বাবদ ৩৩ হাজার টাকা নেয়া হচ্ছে। প্রতিমাসের ৪ হাজার ৬৫০ টাকা হারে টিউশন ফি আদায় করছে প্রতিষ্ঠানটি। আর এ ৮ মাসের মেডিকেল ফি বাবদ ২৪০ টাকা, টেস্টিমনিয়াল ফি বাবদ ১০০ টাকা ও বোর্ড ফি বাবদ ১ হাজার ৬৯৫ টাকা ও কেন্দ্র ফি বাবদ ৮০৫টাকা নেয়া হচ্ছে। সে হিসেবে ফরমপূরণের সময় ৪০ হাজার ৭৪০টাকা আদায় করা হচ্ছে। তবে, শিক্ষার্থীরা ভর্তির সময় ১০ হাজার টাকা সিকিউরিটি ডিপোজিট করেছিল। সেসব শিক্ষার্থীর সিকিউরিটি ডিপোজিটের টাকা প্রাপ্য তাদের টাকা ফেরত সাপেক্ষে ফরমপূরণে ৩০ হাজার ৭৪০টাকা নেয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত কোনও ফি নেয়া হচ্ছেনা, প্রচলিতভাবে যে ফি নেয়া হয় তাই নেয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্তারা।
শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা মোতাবেক, এইচএসসি পরীক্ষার ফি বাবদ পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে পত্রপ্রতি ১০০ টাকা, ব্যবহারিকের ফি বাবদ পত্রপ্রতি ২৫ টাকা, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্টের ফি বাবদ পরীক্ষার্থী প্রতি ৫০ টাকা, মূল সনদ বাবদ ১০০ টাকা, বয়েজ স্কাউট ও গার্লস গাইড ফি বাবদ ১৫ টাকা এবং জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ফি বাবদ পরীক্ষার্থীপ্রতি ৫ টাকা নেয়া হবে। এছাড়া অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীপ্রতি ১০০ টাকা অনিয়মিত ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। কেন্দ্র ফি বাবদ প্রতি পরীক্ষার্থীকে ৪০০ টাকা ও ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি বাবদ পরীক্ষার্থীদের পত্র প্রতি ২৫ টাকা দিতে হবে। আর কেন্দ্র ফি বাবদ পরীক্ষার্থী প্রতি ৬৩০টাকা নেয়া হবে। কিন্তু এইচএসসির ফরম পূরণে রাজধানীর বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ নিচ্ছে ৪০ হাজার ৭৪০টাকা।
আরও পড়ুন : ফরম পূরণে ভিকারুননিসার পৌনে তিন কোটি টাকার বাণিজ্য!
এদিকে ফরম পূরণে অতিরিক্ত ৩৮ হাজার টাকা ফি নেয়ার ক্ষুব্ধ এক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে টাকা আদায় করছে। যা কোনভাবে মেনে নেয়া যায়না। তবুও সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে এসব অবিচার সহ্য করতে হয়। আর ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত টিউশন ফি বাবদ প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩৭ হাজার নেয়া হচ্ছে। যা কোনভাবেই কাম্য নয়। কারণ মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত কোন শিক্ষার্থী ক্লাস করবেন না। শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হচ্ছে।