যশোর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একমাত্র ছাত্রাবাসটি সন্ত্রাস, মাদক আর ছাত্র রাজনীতির গ্রুপিংয়ের কারণে প্রায় এক যুগ ধরে বন্ধ রয়েছে। তিন হাজার শিক্ষার্থীর ২০০ শয্যার ছাত্রাবাসটি বন্ধ থাকায় যশোরের বিভিন্ন গ্রামসহ বাইরের জেলার শিক্ষার্থীদের অবর্ণনীয় ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
যশোর শহরের শেখহাটি এলাকায় সরকারি যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ক্যাম্পাসের ভেতরেই ছাত্রদের সুবিধার জন্য শহীদ অধ্যক্ষ সুলতান উদ্দিন ছাত্রাবাসটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু একটি ছাত্র সংগঠনের গ্রুপিং, সন্ত্রাস, মাদক আর কিছু শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে কর্তৃপক্ষ ছাত্রাবাসটি ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে এর দরজা আর খোলেনি। দেশের বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থীরা এখানে লেখাপড়া করে। তারা শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে বা ব্যক্তিমালিকানাধীন ছাত্রাবাসে থাকে। ফলে মাঝেমধ্যে বিড়ম্বনায়ও পড়তে হয়। চাঁদাবাজি, চুরি, ছিনতাই, জোর করে মিছিলে নিয়ে যাওয়াসহ ওই সব ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীদের মারধর করারও অভিযোগ রয়েছে। ক্যাম্পাস সব সময় অস্থির থাকে। ছাত্র সংগঠনের ক্যাডাররা ছুরি, চাকু নিয়ে ঘোরাঘুরি করে। গত ১৮ জুন ধূমপানসংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে সাব্বির, ইব্রাহিম, শান্ত, সোহাগ ও তন্ময় নামের পাঁচ শিক্ষার্থী ছুরিকাঘাতের শিকার হয়।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এখানে লেখাপড়ার চেয়ে রাজনীতি বেশি হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা কেউ ভাবে না। দীর্ঘ প্রায় এক যুগ একমাত্র ছাত্রাবাসটি বন্ধ থাকলেও কর্তৃপক্ষ এটি চালু করতে ব্যর্থ হয়েছে।
ময়মনসিংহে বাড়ি ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র জাহিদ হাসান বলেন, ‘আমি বাইরের ছাত্রাবাসে থেকে লেখাপড়া করছি। আমাদের ছাত্রাবাসটি চালু হলে আমরা খুবই উপকৃত হবো।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের একজন ছাত্র আক্ষেপ করে বলেন, ‘কলেজের পাশে ব্যক্তিমালিকানাধীন ছাত্রাবাসে থাকি। তাতে আমাদের মাঝেমধ্যেই হয়রানির শিকার হতে হয়। কারো কারো কাছ থেকে চাঁদাও নেয়া হয়। আমাদের ছাত্রাবাসটি খুললে এই বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পেতাম।’
আর একজন ছাত্র বলেন, ‘একটি ছাত্র সংগঠনের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে ছাত্রাবাসটি বন্ধ রয়েছে।’
ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমি এক বছর এখানে এসেছি। কী কারণে ছাত্রাবাসটি বন্ধ রয়েছে—তা বলতে পারছি না। তবে আমি ছাত্রাবাসটি সংস্কার করে চালুর উদ্যোগ নিয়েছি।’