পিরোজপুরের নাজিরপুরের এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম উপজেলার ৩৩নং উত্তর পশ্চিম কলারদোয়ানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত। তিনি একটানা ১৭ বছর যাবত ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আছেন। দীর্ঘদিন স্বেচ্ছাচারীভাবে বিদ্যালয়ে পরিচালনার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষকের এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিকার চেয়ে তাকে অন্যত্র বদলির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা এবং উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে এ দাবি জানান।
অভিযোগে জানা যায়, মো. শফিকুল ইসলাম প্রায় ১৭ বছর আগে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে এখনো কর্মরত রয়েছেন। যোগদানের পর থেকেই তিনি দায়িত্ব পালনে অবহেলাসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করছেন। নানা অজুহাতে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকেন এবং পরে এসে হাজিরা খাতায় একত্রে স্বাক্ষর করেন। তাছাড়া বেশির ভাগ সময়ই তিনি বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টায় বিদ্যালয়ে আসেন এবং দেড়টা থেকে ২টার মধ্যে চলে যান। তার এমন উপস্থিতির কারণে বিদ্যালয়ের অন্যান্য সহকারী শিক্ষকরাও নিয়মিত পাঠদানে অলসতা করেন। এসব কারণে ইতোমধ্যে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থী সংকটসহ ফলাফল বিপর্যয় ঘটছে।
অভিযোগে আরও জানানো হয়, তিনি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদানের পর থেকেই বিদ্যালয়ের সম্পত্তিতে উৎপাদিত ফল-ফলাদি, গাছপালা বিক্রি থেকে টাকা আয় করেন। সরকারি বরাদ্দের টাকা নামমাত্র কাজ করে বা কোন কোন বছর কাজ না করেই আত্মসাৎ করেন। স্কুলের আয়-ব্যায়ের হিসাব এবং তার অনিয়ম ও দুর্নীতিতে যাতে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়াতে না পারে সে জন্য তিনি কৌশলে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নিজের পছন্দ অনুযায়ী ম্যানেজিং কমিটি গঠন করেছেন। এমনকি চলমান কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি পূর্বের আলোকে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেন। সম্প্রতি তিনি একইভাবে পুনরায় কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেন। ওই প্রক্রিয়ায় ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী অভিভাবক সদস্যদের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের শেষ দিন গত ২৪ সেপ্টেম্বর বেলা ১১ টার দিকে শিক্ষার্থী অভিভাবক মো. নুরুল হুদা ও মো. ইয়াছিন আরাফাতসহ কয়েকজন অভিভাবক সদস্য পদের জন্য মনোনয়ন ফরম কিনতে গেলে তাদের ফিরিয়ে দেন প্রধান শিক্ষক।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, এ বিষয়ে মোবাইলে কিছু বলা যাবে না। স্কুল খোলার পরে আসেন কথা হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবুল বাসার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি এ উপজেলায় সবেমাত্র যোগদান করেছি। তবে আমি শুনে অবাক হয়েছি একজন প্রধান শিক্ষক কীভাবে একই বিদ্যালয়ে ১৭ বছর চাকুরি করছেন। লিখিত অভিযোগ পওয়া গেছে। তদন্ত করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।