একঘরে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান

রাজশাহী প্রতিনিধি |

চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। এই সুযোগে বোর্ডের এক কর্মকর্তা চাচ্ছেন চেয়ারম্যান হতে। এদিকে পরিচালনা পরিষদের সভা ডেকেও সদস্যদের হাজির করতে পারছেন না বর্তমান চেয়ারম্যান। এর ওপর ১৫ দিন ধরে কাজকর্ম ফেলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা আন্দোলন করছেন। সব মিলিয়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ কার্যত একঘরে হয়ে পড়েছেন।

শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বোর্ড পরিচালনার জন্য ১১ সদস্যের একটি পরিচালনা পরিষদ রয়েছে। এই পরিষদ বা কমিটি বোর্ডের বিভিন্ন কাজের অনুমোদনের জন্য সভা করে সিদ্ধান্ত নেয়। সর্বশেষ গত ২৫ জানুয়ারি এই সভার আয়োজন করা হয়। কিন্তু সভায় একজন সদস্য উপস্থিত হন। বাকিরা কেউ আসেননি। ফলে সভা পণ্ড হয়ে যায়। এর আগে ১৫ জানুয়ারি একই সভা আয়োজন করেছিলেন বোর্ড চেয়ারম্যান। বোর্ড পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে তিনি এ সভা আয়োজন করেন। কিন্তু সভায় তিনি ছাড়া একজন সদস্যও ছিলেন না।

সূত্র মতে, ২৫ জানুয়ারির সভায় কোনো আলোচ্যসূচি ছিল না। এ কারণে দিনাজপুরের পাঁচবিবি এস এম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহের নিগার ছাড়া আর কোনো সদস্য উপস্থিত হননি।

জানতে চাইলে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মেহের নিগার বলেন, ‘আমি অনেক দূর থেকেও এই সভায় উপস্থিত হতে গেছিলাম। কিন্তু অন্য কোনো সদস্যের সঙ্গে আমার দেখা হয়নি। ফলে সভাও হয়নি। এ কারণে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বসে থাকার পরে চলে এসেছি। তবে সভায় কোনো আলোচ্যসূচি ছিল কি না জানি না।’

জানতে চাইলে বোর্ড পরিচালনা পর্ষদের আরেক সদস্য ও রাজশাহী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান বলেন, ‘সভা ডাকলেও কোনো আলোচ্যসূচি থাকে না। এ কারণে সভায় যাওয়া হয় না। তবে তাঁদের নিজেদের মধ্যে কোনো ঝামেলা আছে কি না জানি না।’

এদিকে বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এক বছর ধরে চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। প্রায় ৪০ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন। এখনো তদন্ত চলছে। এই অবস্থায় বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে দেখা দেয় বিভক্তি। এরই মধ্যে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা।

একাধিক সূত্র মতে, গত ১৩ জানুয়ারি চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আন্দোলনকারী কর্মচারীরা উপ-কলেজ পরিদর্শকের ওপর হামলা চালায়। পরে তারা বোর্ডের উপ-কলেজ পরিদর্শকের কার্যালয়ে গিয়ে আসবাব ভাঙচুর করে। এ নিয়ে উপ-কলেজ পরিদর্শক মঞ্জুর রহমান খান ১১ জনকে আসামি করে নগরীর রাজপাড়া থানায় একটি মামলা করেন। এর আগে আন্দোলনরত কর্মচারীরা সহকারী হিসাব কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করে। ৬২ জন অস্থায়ী কর্মচারী প্রায় ১৫ দিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ‘চেয়ারম্যানের কারণেই শিক্ষা বোর্ডের অবস্থা বেহাল। বোর্ডের আরো এক কর্মকর্তা চাইছেন চেয়ারম্যান হতে। এ নিয়েও চেয়ারম্যানের সঙ্গে দূরত্ব রয়েছে তাঁর।’

তবে এসব নিয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সভা হয় না কারণ কেউ

হয়তো প্রভাবিত করছে। তবে দ্রুতই আবার সভা হবে। আমার কাজ এখানেই সব অনুমোদন নিতে হয়। সভায় কোনো সদস্য পর পর তিনবার উপস্থিত না হলে তাঁর পদ থাকে না।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026881694793701