মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে সারা দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের শিশু-কিশোরদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পৌঁছে দেওয়া জরুরি বলে মনে করেন ড. কাজী খলীকুজ্জমান।
বুধবার ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সেমিনারে তিনি বলেন, “আমি গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াই। আমি দেখি এখনো অনেক স্কুল আছে যেখানে পতাকা ওঠে না, জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয় না।”
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানা ছাড়াই দেশের প্রজন্ম বেড়ে উঠছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান।
“এখনো অনেক শিক্ষার্থী মুক্তিযুদ্ধ কোন বছর হয়েছিল জানে না, তারিখ তো দূরের কথা। মুক্তিযুদ্ধ কার নেতৃত্বে হয়েছিল, তাও জানে না। এ অবস্থা এখনো আছে, তবে কমে আসছে।”
দেশের গ্রামাঞ্চল এবং প্রান্তিক এলাকার নতুন প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের যথাযথ ইতিহাস তুলে ধরতে সচেতন হতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
খলীকুজ্জামান বলেন, “সম্প্রতি আমরা কিশোর-কিশোরীদের একটা সম্মেলন করেছিলাম, সারা দেশ থেকে কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে এসেছিলাম। তাদের মধ্যে যে জানার আগ্রহ, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে এবং যে উদ্দীপনা, সে বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে।”
‘আসন্ন নির্বাচন ও জননিরাপত্তা’ শীর্ষক এই সেমিনারে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে জননিরাপত্তা ধারণাটি পরিবর্তনে জোর দিয়ে নতুন প্রজন্মের জন্য নির্বাচনের সময় সহিংসতা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান ড. কাজী খলীকুজ্জমান।
সহিংসতা এড়াতে রাজনীতিবিদদের আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।
“অতীতে আমরা নির্বাচনের সময় সহিংসতা দেখেছি। মানুষের জানমাল বিপন্ন হতে দেখেছি। এই অতীত আমাদের মুছে ফেলতে হবে। নতুন প্রজন্মের কথা চিন্তা করেই আমাদের এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।”
জননিরাপত্তার ধারণা নিয়ে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, “আমরা আর জননিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হব না। জননিরাপত্তার বহু দিক রয়েছে। এখন আমাদের জনগণের খাদ্যের অধিকার, স্বাস্থ্যের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আমরা চিন্তিত হব, পরবর্তী সরকার যে আসবে তারা দেশের উন্নয়নের জন্য কী করবে। সবাই যদি আমরা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করি তাহলে আমরা এই জননিরাপত্তাকে নিশ্চিত করতে পারব।”
রাজনীতি ও দেশ পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আজকে যেটা হচ্ছে তা হচ্ছে, যারা বড় হয়ে গেছে তাদের তো ভাগাভাগি হয়ে গেছে কে কোন দল করবে, কিন্তু যারা আসছে অর্থাৎ নতুন প্রজন্ম তাদের জন্য যদি আমরা উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত।”
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন উর রশীদ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব সুভাষ সিংহ রায়, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য আব্দুল মান্নান চৌধুরী, জাগো বাংলা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী নাসির আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।