ওয়েস্ট ইন্ডিজ যদি এই বিশ্বকাপ জিততে চায়, তাহলে তারা যে লড়তে পারে এবং জেতার ক্ষমতা রাখে, তা দেখিয়ে দেওয়ার এখনই সময়। এ ধরনের টুর্নামেন্টে বাজে দিন আসবেই, হারের মুখোমুখি হতেই হবে। এখন আমাদের যেটা আশা, তা হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাদের বাজে দিন পেছনে ফেলে এসেছে। আমি এখনও মনে করি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং ও বোলিং যথেষ্ট ভালো; বিশ্বকাপ জেতার মতো। কিন্তু চাপ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।
সেমিফাইনাল খেলতে হলে এখন থেকে প্রায় প্রতিটি ম্যাচই জিততে হবে। শেষ চারে যেতে ১১ পয়েন্টই সম্ভবত যথেষ্ট। যেহেতু নিউজিল্যান্ড আর ভারতের মতো দলের সঙ্গে খেলা এখনও বাকি, তাই জেতাটা শুরু করতে হবে এখন থেকেই। ইংল্যান্ডের সঙ্গে হেরে তারা নিশ্চয়ই হতাশ। কারণ ওটা ছিল বড় এক সুযোগ। আর তারা কি-না এ ম্যাচটাতেই নিজেদের সবচেয়ে বাজে ব্যাটিংটা করল!
ইংল্যান্ডের সেরা বোলারদের খেলে ফেলার পর জো রুটের মতো পার্ট টাইমারকে উইকেট দেওয়া মোটেও উচিত হয়নি। তার বলে সিঙ্গেল নিয়ে নিয়ে খেলতে হতো। শুরুর ধাক্কার পর শিমরন হেটমায়ার আর নিকোলাস পুরানকে ইনিংস মেরামতের কাজটা করতে হয়েছে। তারা ভালোই করেছে। পুরানের পারফরম্যান্সে আমি সত্যিই খুশি; কিন্তু তাদের দু'জনকেই সব দায়িত্ব নিতে বলাটাও তো ঠিক নয়। সাউদাম্পটনের পিচে বিশেষ কিছুই ছিল না, তাই রান করার সুযোগ ছিল অনেক। তার পরও বাকি ব্যাটসম্যানরা তাদের একরকম একা ফেলে যায়।
এ দলে পাওয়ার হিটার অনেক। কিন্তু আমাদের এমন একজনকে দরকার যে টিকে থাকতে পারে। আমি যখন খেলতাম তখন ল্যারি গোমেজ ছিল সেরকম এক খেলোয়াড়। মনে হয় ইংল্যান্ডের মইন আলির মতো একজন অলরাউন্ডারের অভাব তারা বোধ করছে। যে বল করতে পারে আবার ব্যাটিংটাও জানে। এক্ষেত্রে রস্টন চেজ হতে পারে যথার্থ বিকল্প। কারণ সে স্পিন তো করেই তার ওপর ব্যাটেও ধরে খেলতে পারে।
আমার মনে হয়, বোলারদেরও ভাবার সময় এসেছে। পাকিস্তানের মতো প্রতি ম্যাচেই প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দেবে- এমন ভাবনা নিয়ে খেলতে নামাটা মোটেও যুক্তিযুক্ত নয়। তাদের কন্ডিশন বুঝতে হবে, প্রতিপক্ষ ও পিচের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। শর্ট বোলিং করাটা ভালোই, তবে এ ধরনের বোলিংয়ে সাফল্য পেতে হলে লাইন-লেন্থ ঠিক রাখতে হবে। ব্যাটসম্যানকে সবসময় প্রশ্নের মধ্যে রাখতে হবে। ইংল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচে তারা সেটা করতে পারেনি। তবে এখনই সব শেষ হয়ে যায়নি। দলের সবাইকে একতাবদ্ধ করে জয়ের ধারায় ফিরতে হলে জেসন হোল্ডারকে কাজ করতে হবে।
তারা টুর্নামেন্টে ভালোভাবেই শুরু করেছিল আর তারা এখনও লড়ছে। সোমবার তাদের প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। তারা মোটেও হেলাফেলার মতো কোনো দল নয়। তারা বিশ্বকাপের আগে ট্রাই সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তিন বার হারিয়েছে। আর বিশ্বকাপে ইতোমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে। ইংল্যান্ডের সঙ্গে বড় রান তাড়া করতে নেমেও খারাপ করেনি। দু'দলের জন্যই এটা বাঁচা-মরার লড়াই। সন্দেহ নেই, বাংলাদেশ খুবই আত্মবিশ্বাসী থাকবে, তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এখন দেখিয়ে দেওয়ার পালা।