এনটিআরসিএর নতুন চেয়ারম্যানের কাছে প্রত্যাশা

ভূপেন্দ্র নাথ রায় |

এনটিআরসিএ’র  নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান খান মোহাম্মদ বিলালকে অভিনন্দন। শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র জাতীয় পত্রিকা দৈনিকশিক্ষায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানতে পারলাম গতকাল (২৪ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের  জারি করা এক আদেশে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ- এর ৯ম চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। তার এই গুরু দায়িত্ব অর্জনে আপামর নিবন্ধনপ্রাপ্তরা সাধুবাদ জানাচ্ছেন। একই সাথে প্রত্যাশা করেছেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের মরিচা ধরা নিয়মে প্রাণের সঞ্চার হবে এবার।

এনটিআরসিএ ২০০৫ খিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় প্রথম ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন ড. গাজী মোহাম্মদ আহসানুল কবীর। বিদায়ী চেয়ারম্যান এএমএম আজাহার ছাড়া পূর্ববর্তী চেয়ারম্যানদের শিক্ষক নিবন্ধনের পরীক্ষা গ্রহণ এবং সনদ প্রদান ছাড়া আর কোনো দায়িত্ব ছিল না। এদেঁর দায়িত্বকালেই প্রতিষ্ঠানটির কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী জাল সনদ বিক্রি ও পাস করিয়ে দেয়ার মহা বাণিজ্য গড়ে তোলার অভিযোগ ওঠে। দৈনিক শিক্ষাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, প্রায় ৬০ হাজার জাল নিবন্ধন সনদ দিয়ে চাকরির কথা। যেহেতু এতদিন নিয়োগের সম্পূর্ণ ক্ষমতা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা কমিটির হাতে ছিল, সেহেতু এ ব্যাপারে ততোটা  মাথাব্যথা ছিল না। কারণ, কমিটি কাছে মেধার চেয়ে টাকার অঙ্কটাই প্রধান ছিল। ফলে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়োগ নিয়ে চারদিকে অনেক প্রশ্ন ওঠে এবং বর্তমান সরকার কমিটির একচ্ছত্র ক্ষমতা খর্ব করে এনটিআরসিএ’র ওপর ন্যাস্ত করে। জনাব আজাহার এই গুরু দায়িত্ব পেয়ে প্রায় পনের হাজার শূন্য পদের বিপরীতে মাত্র ৬/৭ হাজার শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ দিতে সক্ষম হন। এদিকে বিসিএস পরীক্ষার আদলে নেওয়া ১৩ তম নিবন্ধনধারীদের এখনও নিয়োগ দিতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। ফলে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠ শিক্ষার ক্ষেত্রে নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে, যা দেখার কেউ নেই।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়োগ থমকে যাওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমানে শিক্ষক সংকটে ভুগছে, যার উত্তরণ নতুন চেয়ারম্যানের হাতেই সম্পন্ন হবে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন শিক্ষক নিবন্ধনধারীরা। খান মোহাম্মদ বিলালের শুভাগমনে যেন এনটিআরসিএ নামক প্রতিষ্ঠানটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে রূপ না নিয়ে একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। নিবন্ধনধারীরা তার কাছে দাবি তুলেছেন-

১. প্রথম ধাপেই হাইকোর্টে রিটকারী নিবন্ধিতদের নিয়োগ, ২. পর্যায়ক্রমে প্রত্যাশীদের নিয়োগ, ৩. জাল সনদধারী শিক্ষকদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ। শিক্ষার্থীদের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষকের অভাব দূরীকরণে নবনিযুক্ত চেয়ারম্যানের কার্যকর ভূমিকা রাখার দাবি তুলেছেন ১-১৩ তম নিবন্ধন সনদপ্রাপ্তরা।

 

লেখক : অধ্যক্ষ, দিনাজপুর।

 

[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন]

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0055999755859375