ফান্ডে কোটি কোটি টাকাএবার বেসরকারি মতিঝিল মডেল কলেজের অধ্যক্ষ পদে সরকারি কলেজের অধ্যাপক

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ভিকারুননিসার পর এবার মতিঝিল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ পদে সরকারি কলেজের একজন শিক্ষককে প্রেষণে নিয়োগ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের এই নতুন অধ্যক্ষ খ ম রশিদুল হাসান। তিনি যশোর সরকারি এমএম কলেজের পদার্থ বিদ্যার অধ্যাপক। ২০ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে এ তথ্য জানা যায়। 

কোটি কোটি টাকা রয়েছে ভিকারুননিসার ফান্ডে। গত বছর ফওজিয়া নামের একজন সরকারি কলেজের অধ্যাপককে ভিকারুননিসায় প্রেষণে নিয়োগ দেয়ার পর কোনও উন্নতির লক্ষণ তো দেখা যায়নি বরং ফান্ডের টাকা শেষ করার নানা পন্থা আবিষ্কার করা হয়েছে বলে অভিভাবকরা জানান। মতিঝিল মডেল কলেজের ফান্ডেও রয়েছে কোটি কোটি টাকা। 

বেসরকারি শিক্ষক নেতারা বলেন, ‘কোনো কোনো বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা নিজেদের শিক্ষক পরিচয় দিতে লজ্জা পান তারা বরং কর্মকর্তা পরিচয় দেন। তারা গত কয়েকবছর ধরে একের পর এক বেসরকারি স্কুল-কলেজ দখল করে নিচ্ছেন। মুখে তারা বেসরকারি শিক্ষকদের ছি:ছি করেন। কিন্তু তিলে তিলে গড়ে ওঠা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি তাদের শ্যেনদৃষ্টি বহুবছর আগে থেকে।’ 

নেতারা বলেন, যেসব স্কুল-কলেজের ফান্ডে কোটি কোটি টাকা থাকে সেখানেই সরকারি কলেজের শিক্ষকদের নিয়োগ দেয়া হয়।

এদিকে, অভিভাবকদের আন্দোলনের মুখে সভাপতির পদ ছাড়তে বাধ্য হলেও মতিঝিল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের এখনও কর্তৃত্ব রয়েছে বিতর্কিত আওলাদ হোসেনেরই। টর্চার সেলে শিক্ষকদের ওপর নির্যাতন, অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ, প্রশ্নফাঁস ও কোটি কোটি টাকা লুটপাটসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে আওলাদ হোসেনকে সরিয়ে দেয়া হয়। একজন অতিরিক্ত সচিবকে সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হলেও তিনি এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত বোঝা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন শিক্ষক ও অভিভাবকদের কাছে।

অভিভাবকরা দৈনিক শিক্ষাকে জানান, আওলাদের অপকর্মের সহযোগীকে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান পদে রাখা হয়েছে। নয় মাস আগে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিলেও সভাপতি তা গ্রহণ করছেন না। স্কুলটিতে লিফট লাগানো হচ্ছে না। ব্যাংক এশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নিচ্ছে না।   টিউশন ফি জমা দেয়ার জন্য অভিভাবকদের ভোগান্তি। পুরো সেপ্টেম্বর মাসে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি জমা দেয়ার জন্য দুটি পৃথক ব্যাংককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে অনেক অভিভাবককে। 

হাবিবুর রহমান নাামের একজন অভিভাবক জানান, সভাপতি পদে যে অতিরিক্ত সচিব রয়েছেন তিনি মূলত ঢাকার স্থানীয় হওয়ায় আওলাদের লম্বা হাতের নাগালেই তার পরবর্তী পদোন্নতিসহ অন্যান্য বিষয়। তাই সভাপতি কোনো কাজ করছেন না। পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন সেলিনা শামসী অথচ তার পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করছেন না। 

গত বারো বছর ধরে আওলাদ ও তার প্রেত্মাতাদের কারণে একসময়ে ভালো ফল করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির এসএসসি পরীক্ষার ফল ধারাবাহিকভাবে খারাপ হয়েছে। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে এই প্রতিষ্ঠান থেকে জিপিএ-৫ (‘এ’ প্লাস) পেয়েছিল ১ হাজার ১৩০ জন শিক্ষার্থী। সেটা প্রতিবছর কমতে কমতে গত বছর জিপিএ-৫ পায় ২২৫ জন। ফেল করে অনেকে। 

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শাখা মতিঝিল কলোনিতে অবস্থিত, আরেকটি শাখা ক্যাম্পাস বাসাবো এলাকায়। বর্তমানে ১১ হাজার বেশি শিক্ষার্থী পড়ছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028488636016846