এবার সমাপনী পরীক্ষা নিতে শিক্ষা বোর্ড

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

পঞ্চম শ্রেণি শেষে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা থাকা নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই সরকার এই পরীক্ষার ব্যবস্থাপনার জন্য ‘প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড’ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদনও দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এখন অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষে বোর্ডের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। 

বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বোর্ড হলে তার অধীনে এই পরীক্ষা নেওয়া হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এফ এম মনজুর কাদির বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী চলবে। যেহেতু বিরাটসংখ্যক পরীক্ষার্থী, সেখানে শুধু অধিদপ্তরের পক্ষে এই পরীক্ষা নেওয়া কঠিন বিষয়। এতে অধিদপ্তরের অন্যান্য কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ছাড়া প্রাথমিকের চেয়ে অনেক কমসংখ্যক পরীক্ষার্থী নিয়েও মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে বেশ কয়েকটি (১১টি) শিক্ষা বোর্ড রয়েছে। বিশাল কর্মযজ্ঞের কথা বিবেচনা করেই ‘প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড ’ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূ্ত্রে জানা  গেছে, সরকারের ‘বাধ্যতামূলক প্রাথমিক  শিক্ষা বাস্তাবায়ন পরিবীক্ষণ ইউনিটকে’ বিলুপ্ত করে এর জনবল ‘প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড’ একীভূত করা হবে। কারণ, দেশের ২৬ হাজার ১৯৩ টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি হয়ে যাওয়ার পর গতকয়েক বছর কার্যত এই ইউনিটের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের খুব একটা কাজ নেই। অনেকটা বসে বসে বেতন নিচ্ছেন। এই ইউনিটে ৫৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদের মধ্যে বর্তমানে ৪৫ জন কর্মরত । একজন অতিরিক্ত সচিব এই ইউনিটের মহাপরিচালক। বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দেখভালের জন্য ১৯৯০ খ্রিষ্ঠাব্দে এই ইউনিট গঠিত হয়েছিল।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড করার জন্য আইন করতে হবে। সেটির প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।

বর্তমানে সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে প্রায় ৬৬ হাজার। প্রতিবছর প্রায় ৩০ লাখের মতো শিক্ষার্থী প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেয়। ২০০৯ খ্রিষ্ঠাব্দে অনকেটা আকস্মিকভাবেই সারা দেশে পঞ্চম শ্রেণি শেষে কেন্দ্রীয়ভাবেই সমাপনী পরীক্ষা চালু হয়। কিন্তু শুরু থেকেই এই পরীক্ষা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। এমনকি ২০১০ খ্রিষ্ঠাব্দে করা জাতীয় শিক্ষানীতিও কেন্দ্রীয়ভাবে এই পরীক্ষা নেওয়া সমর্থন করেনি। শিক্ষক ও অভিভাবকেরা বলে আসছেন, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার নামে শিশুদের ওপর ‘ বোঝা চাপিয়ে’ দেওয়া হয়েছে। কোচিং-প্রাইভেট টিউশন ও সহায়ক বইয়ের ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে।

জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, প্রথমত পঞ্চম শ্রেণি শেষে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। কারণ, এই পরীক্ষার জন্য অল্প বয়সী শিশুদের ওপর মনস্তাত্ত্বিক চাপ পড়ছে। যেখানে এই পরীক্ষারই প্রয়োজন মনে  হচ্ছে না, সেখানে প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রয়োজন আছে বলেও মনে হয় না।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ফল জালিয়াতি: পদে রেখেই সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত - dainik shiksha ফল জালিয়াতি: পদে রেখেই সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত শিক্ষক-কর্মচারী বদলি নীতিমালার কর্মশালা কাল - dainik shiksha শিক্ষক-কর্মচারী বদলি নীতিমালার কর্মশালা কাল দুবাইয়ে বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা - dainik shiksha দুবাইয়ে বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি ৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন করবেন যেভাবে - dainik shiksha ৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন করবেন যেভাবে ফিলিস্তিনকে সমর্থনের ‘অভিযোগে’ সেরা ছাত্রীর বক্তৃতা বাতিল - dainik shiksha ফিলিস্তিনকে সমর্থনের ‘অভিযোগে’ সেরা ছাত্রীর বক্তৃতা বাতিল মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025460720062256