এমপিও নীতিমালা সংশোধন কমিটি সমীপে

ড. মো. এমদাদুল ইসলাম |

এমপিও নীতিমালা ২০১৮ সংশোধনের কাজ চলছে। শিক্ষা ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের জন্য ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে এমপিও নীতিমালায় অনেক পরিবর্তন আসলেও এর কিছু  ধারা পরিবর্তনের  জন্য শিক্ষক সমাজ দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন,  কিন্তু আজ পর্যন্ত পরিবর্তন করা হয় নাই। যেমন কলেজ পর্যায়ে প্রভাষকদের পদোন্নতিতে ৫:২ অনুপাত প্রথা যা কালো প্রথা নামে পরিচিত।

বিষয়টিকে একটি উপমার মাধ্যমে আলোচনা করা যাক। মনে করি, একটি প্রতিষ্ঠানে ২০ জন প্রভাষক রয়েছেন। জনাব করিম উক্ত প্রতিষ্ঠানের ২০তম শিক্ষক। তার শিক্ষা জীবনে চারটি ১ম বিভাগ/ শ্রেণি রয়েছে। তিনি আরও উচ্চতর ডিগ্রি এমফিল এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তার আবার ছয়টি গবেষণা আর্টিকেল রয়েছে। তিনি খুব ভালো পাঠদান করেন এবং  শিক্ষার্থী মহলে তিনি বেশ জনপ্রিয়।  কিন্তু এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী ৫:২ প্রথার কারণে তিনি কোনো দিনই সহকারী অধ্যাপক হতে পারবেন না। ফলে তিনি উপাধ্যক্ষ পদে আবেদনের জন্য অযোগ্য হয়ে গেলেন, আর অধ্যক্ষ পদ তার জন্য অধরাই থেকে গেল। অতএব জনাব করিমকে দীর্ঘ চাকরি জীবন শেষে প্রভাষক হিসেবেই অবসর গ্রহণ করতে হবে। তাহলে জনাব করিম কেন বেসরকারি শিক্ষার্থীদের পাঠদানের দায়িত্ব নিবেন? বাধ্য হয়েই তাকে অন্য পেশা বেছে নিতে হবে। 

কিছু অপরিপক্ক এবং অদূরদর্শী লোক কর্তৃক সৃষ্ঠ এমপিও নীতিমালার কারণেই আমরা মেধাবী শিক্ষকদের শিক্ষকতা পেশায় ধরে রাখতে পারছি না। অথচ দেশের প্রায় ৯৭ শতাংশ শিক্ষার্থী বেসরকারি ব্যবস্থায় শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। একে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নাই। তাই মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করতে এমপিও নীতিমালা থেকে ৫:২ বাতিল করে পদোন্নতির ক্ষেত্রে এবং উপাধ্যক্ষ ও অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে  ভালো ফলাফলের অধিকারী, ভালো পাঠদানকারী, উচ্চতর ডিগ্রি যেমন এম.ফিল বা পিএএইচডি ডিগ্রিধারী, গবেষণা আর্টিকেলধারী শিক্ষকদের অগ্রাধিকার দিয়ে এবং বাতিলকৃত সহযোগী অধ্যাপক পদ পুনরায় সংযোজন করে ও অধ্যাপক পদ সৃষ্টি করে এমপিও নীতিমালা প্রণয়ন করা এখন সময়ের দাবি।  এ ক্ষেত্রে মহান জাতীয় সংসদ কর্তৃক পাসকৃত জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এর ২৭নং অধ্যায় অনুসরণ করা যেতে পারে।

কিছু কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন/অবনমন ঘটতে পারে। দেশের জনগণ কমিটির সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছে। তাই সঠিক এবং সময়োপযুগী এমপিও নীতিমালা প্রণয়ন করবেন এটাই জাতির প্রত্যাশা।

লেখক : ড. মো. এমদাদুল ইসলাম, সভাপতি, এমফিল, পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষক সমিতি।

[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন।]


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027611255645752